আজই মুক্তি মিলতে পারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের

এক দশক আগে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আজ আপিল শুনানিতে হাজির হচ্ছেন এটিএম আজহারুল ইসলাম (ATM Azharul Islam)। বহু প্রতীক্ষিত এই শুনানি ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষত জামায়াতের অভ্যন্তরে। আদালত সূত্র ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আজকের শুনানিতে এই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল), প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ (Syed Refaat Ahmed)–এর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, সোমবার (২১ এপ্রিল) বিচারপতি জুবায়ের রহমান (Zubayer Rahman)–এর নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ আজকের দিনের জন্য শুনানির সময় নির্ধারণ করে।

আজহারের আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিকের করা আবেদনের ভিত্তিতে এই শুনানি এগিয়ে আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। তিনি জানান, “মামলার সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শুনানি এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। আশা করছি দ্রুতই নিষ্পত্তি হবে ইনশাআল্লাহ।”

দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, যদি আজহারের মুক্তি না আসে, তবে ভেতরে ভেতরে অসন্তোষ বাড়বে। এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আজহার সাহেবের মুক্তির আশায় সবাই ছিল। এখন যদি সেটি না হয়, তাহলে দলের মনোবলে বড় ধাক্কা লাগবে।”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগের মধ্যে ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই রায়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে ৫ নম্বর ধারায় ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৬ নম্বর ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ডও প্রদান করা হয়।

২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন এবং ২, ৩, ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগে আগের রায়ই বহাল থাকে। ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস পান তিনি। সেই সময় আজহারের পক্ষে ছিলেন প্রয়াত আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর ওই বছরের ১৯ জুলাই এটিএম আজহার পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন, যেখানে ২৩ পৃষ্ঠার আবেদনে মোট ১৪টি আইনি যুক্তি তুলে ধরা হয়।

দীর্ঘ এই আইনি প্রক্রিয়ার পরে আজকের শুনানিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক, বিচারিক এবং সামাজিক অঙ্গনে দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে। জামায়াতপন্থীরা যেমন আশাবাদী, তেমনি দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *