ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স (University of Scholars) অবশেষে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত দুই নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। তবে অনেকেই এটিকে আই ওয়াশ হিসাবে দেখছেন। কারণ, অভিযুক্তরা পুরো ঘটনার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে, এবং এই বহিষ্কার প্রকৃত বিচারের বিকল্প হতে পারে না।
বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাতেমা তাহসিন ঐশী (আইডি: ২৪১০৫০০১৩) এবং ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা (আইডি: ২৪১০৪০০৪৮)। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার জানিয়েছেন, সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে বহিষ্কারের আদেশ জারি করা হয় এবং আজ (২২ এপ্রিল) তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনা তদন্তে একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঐশী ও টিনার সম্পৃক্ততার আভাস পাওয়া গেছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই কারণেই তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে এখানেই প্রশ্ন উঠছে—এই বহিষ্কার কি যথেষ্ট? আদালতের মুখোমুখি না করে, শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ তদন্তে তারা দায়মুক্তি পেয়ে যাবে কি? সমালোচকরা বলছেন, মূল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Primeasia University) ইতিমধ্যে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অভিযুক্তদের বিষয়ে জানতে চায়। সেই প্রেক্ষিতেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার মোবাশ্বের আলী খন্দকার। কিন্তু এই পদক্ষেপ অনেকের কাছে ‘প্রতিকী’ মনে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত চলাকালে বহিষ্কৃতদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে প্রক্টোরিয়াল কমিটি। ফলে অভিযুক্তদের বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। চূড়ান্ত তদন্ত ও পুলিশের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তাদের ছাত্রত্ব স্থগিত থাকবে।
তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, এটি যেন অভিযুক্তদের রক্ষাকবচে পরিণত না হয়। বরং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্থায়ী বহিষ্কারের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে এবং তদন্তে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।
প্রাইমএশিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. রায়হানা বেগম (Professor Dr. Raihana Begum) জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, পারভেজের পরিবারের পাশে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না অভিযুক্তরা আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ায়, ততক্ষণ এই বহিষ্কারকে ‘প্রতিকী পদক্ষেপ’ বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার ছাড়া এই ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না।