বিএনপি (BNP) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শেষ নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ে মঙ্গলবার বিকেলে এক পথসভায় আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমার বোধ হয় এটাই শেষ নির্বাচন। শরীরের অবস্থাও ভালো না। আর করতেও পারব বলে মনে হয় না। তাই এবারের শেষ নির্বাচনে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে কাজ করার সুযোগ দিন আপনারা।”
“ভোট নয় বিভাজন নয়, চাই ভালোবাসার বাংলাদেশ”
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের মোলানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত গণসংযোগ কর্মসূচির এই পথসভায় বিএনপি মহাসচিব দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, “বিভাজন নয়, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই আমরা। একটা ভালোবাসার বাংলাদেশ চাই।”
তিনি আশ্বস্ত করেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সবচেয়ে বেশি নিরাপদে থাকবে।
“ডাইনি হাসিনার” বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় অভিযোগ
আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আগের চেয়েও কড়া ভাষা প্রয়োগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা অনেক বছর একটা ডাইনির হাতে জিম্মি থেকেছি। কোনো পরিবারে বিএনপির গন্ধ থাকলেই চাকরি পেত না, ব্যবসাতেও বাধা দিত।”
তিনি আরও দাবি করেন, “দীর্ঘ সংগ্রাম আর অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা তার হাত থেকে রেহাই পেয়েছি। তারপরও ডাইনি হাসিনা পাশের দেশ ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে।”
গুমের অভিযোগ: “১৭০০ মানুষ নিখোঁজ”
আয়নাঘর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা ও আওয়ামী লীগ যাদের ভয় করেছে, যাদের হুমকি মনে করেছে, তাদেরই গুম করেছে। ১৭০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে, যাদের অনেকেরই খোঁজ পাওয়া যায়নি।”
যাদের খোঁজ পাওয়া গেছে, তাদের অনেকে ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত আটক ছিলেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
কর্মীদের উদ্দেশ্যে সতর্ক বার্তা
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দল বিএনপি। অন্যায় করবেন না, যদি করে থাকেন তাহলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
তিনি আহ্বান জানান, অন্যায়কারীদের আইনের হাতে তুলে দিতে এবং দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে। “দল আপনাদের, ধানের শীষ আপনাদের, রক্ষা করার দায়িত্বও আপনাদেরই,” বলেন তিনি।
নেতাদের উপস্থিতি
এই পথসভায় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ আরও অনেক নেতাকর্মী।