চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, পুনরায় শুনানি রবিবার

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (Chinmoy Krishna Das Brahmachari) এর জামিন নিয়ে নতুন মোড়। হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আগামী রবিবার (৪ মে) এ বিষয়ে পুনরায় শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা (Muhammad Abdul Jabbar Bhuiyan)।

বুধবার সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক (Justice Md. Rezaul Haque) এই আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে জামিন স্থগিতের আদেশ মঞ্জুর হলেও, সন্ধ্যায় সেই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, “এটি একটি সংবেদনশীল মামলা। একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী হত্যার শিকার হয়েছেন। তাই আমরা জামিন আদেশ স্থগিতের জন্য আবেদন করেছিলাম। চেম্বার আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করেছিলেন, তবে পরে তা প্রত্যাহার করেন।”

এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চেম্বার আদালত চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত করলেও, দুপুর ২টার দিকে বিচারপতি মো. আতাউর রহমান ও বিচারপতি মো. আলী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন এবং জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করেন।

জামিন স্থগিতের আবেদন করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হেলাল আমীন (Helal Amin)। চিন্ময়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য (Apu Barua Bhattacharya)। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বিএ অনীক আর হক (Barrister Anik R Haque) ও মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশে জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা স্থাপনের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত) চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন, যাতে চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

এ মামলায় ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় চিন্ময়কে। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরের পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম। এরপর চট্টগ্রামে তার অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়, যেখানে শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন এবং অন্তত ২০ জন আহত হন।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এখন পর্যন্ত কারাগারেই রয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি হাইকোর্টে নতুন করে জামিন আবেদন করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *