৩ মে’র মহাসমাবেশে ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার’ কুশপুত্তলিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীবিদ্বেষের অভিযোগের জবাবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। রোববার সংগঠনের মহাসচিব সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, যারা তাদের ‘নারীবিদ্বেষী’ আখ্যা দিচ্ছে, তারা আওয়ামী দোসর এবং জুলাই বিপ্লবের শত্রু ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি দাবি করেন, জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কুশপুত্তলিকা ঝোলানোর ঘটনা ঘটেছে এবং এর সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি উল্লেখ করেন, ১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘জাগ্রত জুলাই’ নামের স্টিকারে চিহ্নিত একটি স্ট্যান্ডে ওই কুশপুত্তলিকা ঝোলানো হয়, যা ‘The Dacca’ নামক একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেই পটভূমিতে ৩ মে মহাসমাবেশ চলাকালীন দৃশ্যটি সামনে আসে, যা সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনায় ঘটে বলে দাবি করেছেন সাজেদুর রহমান।
বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব আরও বলেন, অতীতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের আক্রমণ এবং সেক্যুলার মিডিয়ার অপপ্রচারের মাধ্যমে সংগঠনটির বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে। এবারের মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নারী অধিকার প্রসঙ্গে সাজেদুর রহমান জানান, হেফাজতে ইসলাম নারীর সম্মান, মর্যাদা এবং ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন ও প্রচারণা কর্মসূচি গ্রহণের কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন দেশের বৃহত্তর ধর্মপ্রাণ নারীসমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না এবং এই কমিশন গঠনের সময় বিজ্ঞ আলেম-ওলামাদের পরামর্শও নেওয়া হয়নি। সাজেদুর রহমান বলেন, নারী উন্নয়নে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ এবং স্বকীয় ইতিহাস-ঐতিহ্যের আলোকে এগিয়ে যেতে হবে; আধুনিক ব্যবস্থায় নারীদের নিগ্রহের কারণগুলিও সমানভাবে আলোচনায় আসা জরুরি।
সংগঠনটির অবস্থান স্পষ্ট করে সাজেদুর রহমান বলেন, হেফাজত কখনো নারীর অসম্মান বা বিদ্বেষে বিশ্বাস করে না, বরং উগ্র ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠীই তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।