ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মূল সড়কে না উঠেও ভাঙা হওয়া তিনটি ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নিজেই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত সোয়া ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া ওই পোস্টে ডিএনসিসি প্রশাসক লেখেন, ‘আজকে যে তিনজনের রিকশা ভাঙা হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে। মেইন রোডে না আসার জন্য তিনটি রিকশা ভাঙা হয়েছিল। আমরা পরিবারগুলোকে আয়ের বিকল্প ব্যবস্থার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছি।’
এর আগে দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি ও আসাদগেট এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (Dhaka North City Corporation) অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চালায়, যার সহায়তায় ছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (Dhaka Metropolitan Police)। অভিযানে মূল সড়কে চলাচলকারী শতাধিক রিকশা জব্দ করা হয় এবং অন্তত তিনটি রিকশা ভাঙচুর করা হয়। সেই সময় থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে।
প্রশাসনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মূল সড়কে না উঠলেও এই তিনটি রিকশার গন্তব্য বা অবস্থান এমন জায়গায় ছিল যা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার পরিপন্থী ছিল। তবুও বিষয়টি পুনঃমূল্যায়নের পর ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অভিযানকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি জানান, ‘এক সমীক্ষায় দেখা গেছে বর্তমানে ২০ শতাংশ দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী এই ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা। এসব রিকশা কোনো নিয়ন্ত্রণবিধি বা যাত্রী নিরাপত্তার চিন্তা করে তৈরি করা হয়নি। প্রায়ই এগুলো পথচারীদের গায়ে উঠে যাচ্ছে, অনিয়ন্ত্রিত গতির কারণে দুর্ঘটনার হার বেড়েই চলেছে।’
ডিএনসিসির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে একটি নীতিমালা অনুযায়ী নিরাপদ ব্যাটারিচালিত রিকশার অনুমোদন। প্রশাসক জানান, কয়েকটি কোম্পানি ইতোমধ্যেই নিরাপদ ডিজাইনের রিকশা তৈরির অনুমতি পেয়েছে। মে মাসের মধ্যেই রিকশাচালকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ চালকরাই বৈধ লাইসেন্স পাবেন এবং কেবল নির্ধারিত এলাকার মধ্যেই সেই রিকশাগুলো চালানো যাবে।
এজাজ আরও বলেন, ‘এক এলাকার বৈধ রিকশা অন্য এলাকায় চালানো যাবে না। এছাড়া যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকাও প্রকাশ করা হবে।’
এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও, রিকশাচালকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিশেষ করে রিকশা ভাঙার ঘটনায় অনেকেই ক্ষুব্ধ। তবে প্রশাসনের আশ্বাস—আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা এবং সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।