চানখারপুল গণহত্যা মামলায় বুধবার ট্রাইব্যুনালে একের পর এক সাক্ষ্য শুনে আদালত কক্ষ ভারী হয়ে ওঠে। শহীদ মো. ইয়াকুবের চাচা এদিন জবানবন্দি দিতে গিয়ে জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট সকালে চানখারপুল এলাকায় শত শত আন্দোলনকারী একত্র হয়েছিল। সেই ভিড়ের মধ্যেই পোষাকধারী কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে তিনি নিজেদের মধ্যে হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শুনেছেন। তাঁর দাবি, ওই পুলিশদের গুলিতেই তাঁর ভাতিজা ইয়াকুব নিহত হন। আবেগে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের ফাঁসি হওয়া উচিত।
ওই দিন চানখারপুল গণহত্যা মামলায় মোট তিনজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। শহীদ ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার সাক্ষ্যে জানান, তাঁর ছেলে নিরপরাধ। আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশের গুলিতে তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
রহিমা আক্তার আরও বলেন, ৩৫ বছরের ইয়াকুব নিউ মার্কেটে ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন। তিনি প্রায়ই ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতেন। গত বছরের ৫ আগস্টও তিনি চানখারপুলে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। সেদিনই গুলিবিদ্ধ হন ইয়াকুব—গুলিটি তাঁর পেটের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে ভুঁড়িসহ বেরিয়ে যায়। ঘটনার পর প্রথমে কেউ তাঁকে বিস্তারিত জানায়নি; কেবল সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। ক্ষোভে তিনি তখন প্রশ্ন তোলেন, “তোমরা কাঁদছ কেন? আমাকে কাঁদতে দাও না কেন?” এক পর্যায়ে তাঁর ছেলের লাশ যখন খাটিয়ায় করে আনা হয়, তখন খাটিয়া বেয়ে রক্ত ঝরছিল।
এদিন আরও সাক্ষ্য দেন শহীদ ইস মামুলের ভাই মহিবুল। তাঁর বক্তব্যও আদালতে নথিভুক্ত করা হয়, যা চানখারপুল গণহত্যার নির্মম চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।