দুর্নীতির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬ নেতা একযোগে পদত্যাগ

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা একাধিক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে একযোগে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির ১৬ জন নেতা। একইসঙ্গে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।

রোববার (১৮ মে) রাত আটটায় রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি (Rangpur District Shilpakala Academy) চত্বরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা বলেন, “রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে যেসব দুর্নীতির অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া গেছে, তা আমাদের আন্দোলনের আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমরা যারা আদর্শিকভাবে কাজ করেছি, তাদের ওপরও এখন এ অপকর্মের দায় এসে পড়েছে, যা আমাদের জন্য চরম অপমানজনক।”

তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে কিছু নেতা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে সংগঠনকে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা চাঁদাবাজি, জমি দখল, অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। এসব কার্যকলাপ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এই পদত্যাগের ঘটনা এমন এক সময় সামনে এলো, যখন মাত্র কয়েকদিন আগেই—গত ১৫ মে—জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মাহমুদুর রহমান লিওন দুর্নীতির অভিযোগে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তার পদত্যাগে অনেকের মধ্যেই অসন্তোষের সঞ্চার হয়, যা পরে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নেয়।

সংগঠন ত্যাগ করা নেতাদের ভাষ্যমতে, “এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল সমাজের নানা বৈষম্যের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য। অথচ এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, সংগঠনের ভেতরেই দুর্নীতি, অনিয়ম আর ক্ষমতার অপব্যবহার প্রবেশ করেছে।”

তারা বলেন, “আমাদের বিবেকের তাড়নায়, আমরা এই আদর্শচ্যুত নেতৃত্বের সঙ্গে আর একমুহূর্তও থাকতে পারি না। তাই আমরা এই মঞ্চ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি এবং সংগঠন ত্যাগ করছি।”

এই গণপদত্যাগে সংগঠনের নেতৃত্ব কাঠামো ও ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন দেখার বিষয়—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র থেকে কী পদক্ষেপ নেয় এবং এই সংকটের উত্তরণে কোন দিক নির্দেশনা দেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *