ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain) অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন এবং সরকারের দুই উপদেষ্টা—মাহফুজ আলম (Mahfuz Alam) ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan)—এর পদত্যাগ দাবি করেছেন। বুধবার (২১ মে) রাতে রাজধানীর কাকরাইলে চলমান বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইশরাক অভিযোগ করেন, সরকারের মধ্যেই রয়েছে এমন শক্তি যারা জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা মেনে নেওয়ার কথা। কিন্তু এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরও আমরা প্রকৃত অর্থে নিরপেক্ষতা দেখতে পাচ্ছি না।”
ইশরাক দাবি করেন, সরকারের কিছু অংশ এখনো রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। “আমি একটি নতুন গঠিত দলের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু সেই দলের লোকজন এখনো সরকারের ভেতরে থেকে কাজ করছে। এতে করে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ফলাফলকে প্রভাবিত করার জন্য সুস্পষ্ট চক্রান্ত চালানো হচ্ছে।”
বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ ও নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলে ইশরাক বলেন, “সরকারের মধ্য থেকে বিচার বিভাগেও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে এই সরকারের অধীনে কি আদৌ একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন সম্ভব?”
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি
ইশরাক তার বক্তব্যে সতর্ক করেন, “আমরা কি আরেকটা স্বৈরাচারী সরকার তৈরি হতে দিতে পারি? শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে থেকেছি, এবারও যদি কেউ স্বৈরাচারের পথে হাঁটে, তাদেরও বিদায় করা হবে।”
সরকারের উপদেষ্টাদের অবস্থান নিয়েও তিনি বলেন, “মেয়র হওয়া না হওয়া বড় কথা নয়, এখন পরিষ্কার যে এই সরকার নিরপেক্ষ নয়। মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া যেন পদত্যাগ করে সরাসরি রাজনৈতিক দল নিয়ে কাজ করেন। সরকারে থেকে তারা এসব করতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। যতক্ষণ না দাবি মানা হবে, ততক্ষণ আমরা রাজপথেই থাকব।”
ইশরাকের সরাসরি অংশগ্রহণে চাঙ্গা আন্দোলন
গত সাত দিন ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ইশরাকের সমর্থকেরা। সেই আন্দোলনে সরাসরি যোগ দিয়েছেন ইশরাক নিজেও। তাকে মাঠে দেখে আন্দোলনকারীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা গেছে।
তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, “আমাদের দাবি ন্যায্য। এখন সময় এসেছে, সব ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচনের।”
সরকারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, উপদেষ্টাদের পক্ষপাতিত্ব, ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের এই অভিযোগের মাঝে দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বাড়ছে অনিশ্চয়তা ও উত্তেজনা।