ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশ ইন) ভারতীয় নাগরিকদের ‘পুশ ব্যাক’ বা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন—যেসব ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণিত, তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে।
বুধবার (২১ মে) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি জানান, বাংলাদেশ সাধারণত ‘পুশ ব্যাক’ নীতি অনুসরণ করে না, কিন্তু ভারতীয় নাগরিক পরিচয় নিশ্চিত হলে ফেরত পাঠানো জরুরি হয়ে পড়ে।
নিয়মের বাইরে কিছু না ঘটুক, দিল্লিকে বার্তা
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত দিয়ে যারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন, তাদের ঠেলে পাঠানো বিষয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন। এই অবস্থায় দিল্লির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যেন নিয়মের বাইরে কিছু না ঘটে।” তবে দিল্লি থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করা বাস্তবসম্মত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ভারতের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা জানান, “তারা তাদের অবস্থান কিছুটা জানিয়েছে, আমরাও আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। আমরা বলেছি, ‘এভাবে দেওয়া’ সঠিক নয়। আমরা একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) মেনে চলি। সেই অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তালিকা পরীক্ষা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ভারতের পাঠানো তালিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চুক্তি পর্যালোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ছোট ছোট বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সময় সময় হয়েছে। এগুলো বাতিল করতে হলে দুই পক্ষের সম্মতি প্রয়োজন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি বাতিল করা হয়নি।”
ভারতের ‘নিয়মের ব্যাখ্যা’ নিয়ে কূটনৈতিক সতর্কতা
ভারতের কর্মকাণ্ড নিয়ম লঙ্ঘন কি না—এ প্রশ্নে কূটনৈতিকভাবে সংযত উত্তর দিয়েছেন উপদেষ্টা। তার ভাষায়, “নিয়মকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। ইতিবাচকভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়, নেতিবাচকভাবেও। কেউ তো স্বীকার করে না যে সে নিয়মের বাইরে যাচ্ছে।”
স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানি বন্ধ—যোগাযোগে বাংলাদেশ
তৈরি পোশাক রপ্তানি ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভারতকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান উপদেষ্টা। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে বাণিজ্য উপদেষ্টা দপ্তর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান স্পষ্ট—বাংলাদেশ নিয়মের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করতে চায় না, একইসঙ্গে ভারতকেও নিয়ম মানার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এখন অপেক্ষা ভারতের প্রতিক্রিয়ার।