বিতর্কিত তিন উপদেষ্টার পদত্যাগের পরিবর্তে যে শর্ত দিলেন ইশরাক

বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন (Engineer Ishraq Hossain) আবারো বিতর্কের কেন্দ্রে। নাম উল্লেখ না করলেও তিনি পরিষ্কারভাবেই দলের তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ অথবা একটি লিখিত প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন, যাতে তারা ভবিষ্যতে কোনো জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন। শনিবার (২৪ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে এই দাবিগুলো জানান তিনি।

ইশরাকের ভাষ্য ছিল কঠোর ও অকম্প্রোমাইজিং। তিনি বলেন, “তিনজন পক্ষপাতদুষ্ট ও বিপজ্জনক উপদেষ্টাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে অথবা একটি মুচলেকায় স্বাক্ষর করতে হবে যে তারা পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। এটি কোনোভাবেই আপসযোগ্য নয়।”

তার দাবি শুধু এখানেই থেমে থাকেনি। তিনি সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে, যিনি ড. খলিলুর রহমান (Dr. Khalilur Rahman), জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানান। ইশরাকের মতে, “জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে যাতে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যেকোনো হুমকি সম্পর্কে আরও তথ্য উদঘাটন করা যায়।”

এই বক্তব্যের রেশ ধরে জানা যায়, গত ২২ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Khandaker Mosharraf Hossain)–ও একাধিক উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন। তার কথায়, “উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে, তাই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদের অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন।”

উল্লেখযোগ্য যে, গত বুধবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার একটি বক্তব্য নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করে। সেই বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদের দোসর কয়েকজন উপদেষ্টাকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি আমরা ইতিপূর্বে অনেকবার উত্থাপন করেছি।”

তিনি আরও মন্তব্য করেন, “একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই সরকারের প্রধান কাজ। সেক্ষেত্রে মাথাভারী উপদেষ্টা পরিষদ না রেখে শুধুমাত্র দৈনন্দিন কাজ পরিচালনার জন্য ছোট পরিসরের উপদেষ্টা পরিষদ থাকাই যুক্তিযুক্ত।”

সামগ্রিকভাবে, ইশরাক হোসেনের এ বক্তব্য নতুন করে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সরকার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব দাবি ও বক্তব্য সামনের নির্বাচনী প্রেক্ষাপটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *