বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraque Hossain) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই ইস্যুতে বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদনের নিষ্পত্তি করে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।
এর আগে বুধবার, ইশরাককে মেয়র হিসেবে গেজেট জারি করা সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চেয়েছিল আদালত এবং বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেছিল। একইসঙ্গে, তাকে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ শুনানির বিষয়ও তালিকাভুক্ত করা হয়।
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন।
এই প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে, গত ২৬ মে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসার করা একটি আবেদন জমা পড়ে, যেখানে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর বিষয়ে হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করা হয়। এর আগেই, ২২ মে হাইকোর্ট একটি রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে জানায় যে, আবেদনটি শুনানিযোগ্য নয়।
রিটের ধারাবাহিকতায় জানা গেছে, ১৪ মে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয় যাতে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করা নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই আবেদনটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ। তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী আকবর আলী।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh) ইশরাককে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে চলতি বছরের ২৭ মার্চ, ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম একটি রায়ে সেই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
রায়ের ভিত্তিতে ২২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নেয় এবং পরবর্তীতে ২৭ এপ্রিল ইশরাককে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে। তবে এই গেজেট জারির পর থেকেই আইনগত বিতর্ক শুরু হয়, যার নিষ্পত্তি এখন আপাতত নির্বাচন কমিশনের কাঁধে তুলে দিলো দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
এদিকে, ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা ডিএসসিসি নগর ভবনের সামনে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন, তাকে মেয়রের দায়িত্ব দ্রুত হস্তান্তরের দাবিতে।
