হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সংগঠন কীভাবে সরকারের মুখপাত্র হয়: ববি হাজ্জাজ

নির্বাচিত সরকারের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার মানে জনগণের ইচ্ছাকে অস্বীকার করা—এমন মন্তব্য করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ (Bobby Hajjaj) বলেছেন, “শাসনব্যবস্থা নিয়ে কথা বলতে হলে আগে নির্বাচিত হয়ে আসুন।” তিনি মনে করেন, ভোটে নির্বাচিত না হয়ে কেউ রাষ্ট্রের কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তা জনগণের অধিকার হরণ করার শামিল।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এনডিএম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party – NCP) এবং তাদের নেতাকর্মীদের কড়া সমালোচনা করে ববি হাজ্জাজ বলেন, “আপনি যদি বলেন নির্বাচন আগে, নাকি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো আগে—তাহলে আপনার তো সরকারের কার্যাবলি সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই।” তিনি অভিযোগ করেন, “সরকারের মুখপাত্রের মতো আচরণ করছে এমন একটি দল, যারা হঠাৎ গজিয়ে উঠেছে এবং তরুণদের নাম দিয়ে রাজনীতিতে পা রেখেছে, যাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা শূন্য।”

এসময় তিনি বলেন, “আপনি যদি বলেই দেন নির্বাচিত সরকারের প্রতি আস্থা নেই, তাহলে মানে আপনি ১৮ কোটি মানুষের বেছে নেওয়া প্রতিনিধি ব্যবস্থাকে মানছেন না। এর অর্থ দাঁড়ায়, আপনি জনগণের কথাও শুনছেন না, বিশ্বাসও করছেন না। এমন অবস্থায় আপনার কথা বলার অধিকার নেই। সেই অধিকার অর্জন করতে হলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসুন।”

সংবাদ সম্মেলনে ববি হাজ্জাজ দাবি করেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (Interim Government) কিছু পছন্দের লোকজনকে ডেকে ‘সর্বদলীয় বৈঠক’ নামে এক নাটক মঞ্চস্থ করছে, যার উদ্দেশ্য শুধুই নির্বাচন বিলম্বিত করা।” তিনি এর অবসান চান এবং বলেন, “এ ধরনের মন খারাপের নাটক আর চলতে পারে না।”

বাজেট নিয়ে এনডিএমের অবস্থানও স্পষ্ট করেন ববি হাজ্জাজ। তার মতে, ৭.৯০ লাখ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রকল্প ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে জনস্বার্থকে উপেক্ষা করছে। এনডিএম মনে করে, জিডিপি প্রবৃদ্ধির মোহ না দেখিয়ে, এবার বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত—অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজার ব্যবস্থাপনা, রিজার্ভ সুরক্ষা এবং আর্থিক খাতে সুশাসনের উপর।

তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এনডিএমের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সামাজিক নিরাপত্তা যেমন জরুরি, তেমনি মানুষের জানমালের নিরাপত্তাও আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।”

ববি হাজ্জাজের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়, তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে দ্বিধান্বিত বক্তব্য ও অগভীর বিশ্লেষণের বিরুদ্ধে। তার মতে, দেশের ভবিষ্যৎ ও গণতন্ত্র রক্ষায় বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকা অপরিহার্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *