যে বিএনপিকে ভালোবাসি সেই বিএনপি খুঁজে পাচ্ছিনা: আসিফ

শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকীতে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর (Asif Akbar)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, “যে বিএনপিকে ভালোবাসি, সেই বিএনপি খুঁজে পাচ্ছি না।”

শৈশব থেকেই জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman)-এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পোষণ করে আসছেন বলে উল্লেখ করে আসিফ বলেন, “আমি শহিদ জিয়ার একজন একনিষ্ঠ অনুরাগী। কিন্তু বর্তমান বিএনপি তার সেই আদর্শিক ভিত্তি থেকে সরে গেছে। আজ যারা জাতীয়তাবাদের নাম ভাঙিয়ে সুবিধা নিয়েছে, তারা আসলে সেই ত্যাগের রাজনীতি করেনি। বরং জিয়া পরিবার হয়েছে নির্যাতনের শিকার, সুফল নিয়েছে কিছু স্বার্থান্বেষী।”

আসিফ আরও বলেন, “সারাদেশে হাজার হাজার বিএনপির তৃণমূল কর্মী গুম, খুন, মামলা, হামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন, অথচ আজ তারাই দলে অবহেলিত। সেই বিএনপি আর নেই, যে বিএনপি ছিল বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের আসল ঝাণ্ডাধারী। যে বিএনপি ছিল জনতার দল, আজ তা কেবল নামেই বিদ্যমান।”

বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে আসিফ বলেন, “শহিদ জিয়ার অবিরাম পরিশ্রমে যে আধুনিক বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি হয়েছিল, সেই শক্তি আজ হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি ছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক অজেয় ধুমকেতু। তাঁর হাতে গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একসময় ছিল জনতার আশা-ভরসার প্রতীক। এখন আবারও বিএনপির সামনে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ এসেছে, তবে এই দল কি আবার সেই জনদলের জায়গায় ফিরতে পারবে?”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন শহিদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচির কথা, যেটিকে তিনি বাংলাদেশের ‘অর্থনীতির ম্যাগনা কার্টা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। “এই ১৯ দফার মূল ছিল অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও জনগণের ক্ষমতায়ন।”

স্ট্যাটাসের শেষভাগে আসিফ আরও বলেন, “আমরা সেই বিএনপি ফেরত চাই, যে বিএনপি ছিল নারী, যুব, শিশু, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবান্ধব। জাতি আজ এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে, সাধারণ মানুষ নতুন আলোর ঝলকানি দেখার অপেক্ষায়। মাহেন্দ্রক্ষণ সমাগত। এখন সময় শহিদ জিয়ার সেই অমোঘ বাণীকে আবার উচ্চারণ করার— ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়।’”

আসিফ আকবরের এই খোলামেলা বক্তব্যে দলটির প্রতি একান্ত ভালোবাসা যেমন উঠে এসেছে, তেমনি বর্তমান বাস্তবতায় সেই ভালোবাসার হতাশাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শহিদ জিয়ার আদর্শে ফেরার এই আহ্বান কেবল এক শিল্পীর নয়, বরং এক নাগরিকের হৃদয়জ অনুভব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *