বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (Bangladesh Cricket Board)–এ চলমান উত্তেজনার আবহে এবার বড়সড় একটি সিদ্ধান্ত ক্রীড়াঙ্গনে নাড়া দিয়েছে। বিসিবির পরিচালক ও সভাপতির দায়িত্বে থাকা ফারুক আহমেদ (Faruk Ahmed)-কে অপসারণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (National Sports Council)। আজ, ২৯ মে, এক সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিসিবির গঠনতন্ত্রের ১৩.২(খ)(৪) ধারা অনুযায়ী এবং সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালনা পর্ষদের মধ্যকার অনাস্থা পরিস্থিতি ও স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে, গতকাল ২৮ মে বিসিবির ৯ পরিচালক থেকে ৮ জন একযোগে ক্রীড়া পরিষদে চিঠি পাঠিয়ে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান। তারও আগে, প্রধানমন্ত্রীর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব (Asif Mahmud Sajib) ফারুককে ডেকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
তবে এইসব চাপের পরও আজ ফারুক আহমেদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না। তার বিরুদ্ধে বিশেষ করে বিপিএল সংক্রান্ত আর্থিক অনিয়ম ও প্রশাসনিক গাফিলতির একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হয় তার মনোনয়ন।
বিসিবিতে এখন শূন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ—একটি পরিচালক পদ এবং অপরটি সভাপতি পদ। এই শূন্যতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্ন তুলছে। আইসিসি এই সিদ্ধান্তকে ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ হিসেবে বিবেচনা করলে, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হতে পারে।
এই মুহূর্তে বিসিবির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সরকারপক্ষের সরাসরি হস্তক্ষেপ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে ক্রীড়া মহলে। ফারুক আহমেদ ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি এই অপসারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হবেন।
ফলে বোর্ডে একদিকে যেমন প্রশাসনিক শূন্যতা, অন্যদিকে আইনগত লড়াইয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হলো, যার প্রভাব বিসিবির ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের ওপর বড় ধরনের ছাপ ফেলতে পারে। এমন সিদ্ধান্ত আইসিসি ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখতে পারে। ফলে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
