উপদেষ্টা থাকাকালে যে কারনে ৫ দিন লক ছিল নাহিদের এনআইডি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা থাকা অবস্থায় নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam)-এর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাঁচদিনের জন্য লক করে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। এনআইডির তথ্য ফাঁসের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, তদন্তে অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় শেষমেশ এনআইডি পুনরায় চালু করে কমিশন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর। এনটিএমসি একটি অভিযোগ জানায় জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগকে—একজন ব্যক্তি ‘ভন্ডবাবা’ নামের একটি গ্রুপের এডমিন এবং তার নাম নাহিদ ইসলাম। সেইসঙ্গে দেওয়া হয় একজনের এনআইডি নম্বর। তথ্য যাচাই না করেই নির্বাচন কমিশন তৎক্ষণাৎ সেই এনআইডি লক করে দেয়। কিন্তু তদন্তে বেরিয়ে আসে, ‘ভন্ডবাবা’ কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নয়, বরং এটি একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ, আর নাহিদ ইসলাম এই গ্রুপের কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নন—তিনি ছিলেন না গ্রুপের সদস্য, না এডমিন।

কমিশনের তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে না পেয়ে জানায়, এই এনআইডি ব্যবহার করে কোনো তথ্য পাচার বা ডাটা সরবরাহের প্রমাণ মেলেনি। এরপর গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আনলক করা হয় নাহিদের জাতীয় পরিচয়পত্র।

তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, “ভোটার কর্তৃক ডাটা সরবরাহ করার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।” সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ২২ সেপ্টেম্বর এনআইডি মহাপরিচালক সিদ্ধান্ত দেন লক তুলে নেওয়ার।

ঘটনাটি যদিও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ঘটেছে, তবে একজন সরকারের সাবেক উপদেষ্টার এনআইডি শুধুমাত্র সন্দেহের বশে লক করে দেওয়ার বিষয়টি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে কমিশনের যাচাই প্রক্রিয়া ও তথ্য যাচাইয়ের পদ্ধতি নিয়ে।

বর্তমান এনআইডি মহাপরিচালক এসএম হুমায়ুন কবীর এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, “সে সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। ফলে বিষয়টি আমার বিবেচনার মধ্যে পড়ে না। তাছাড়া অতীতের কোনো ঘটনায় যার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই, সে বিষয়ে মন্তব্য করতেও আগ্রহী নই।”

এই ঘটনাটি নির্বাচন কমিশনের ভিতরে দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ, তথ্য যাচাইয়ের কার্যপ্রক্রিয়া এবং একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে। এমন ভুল সিদ্ধান্ত কেবল প্রশাসনিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশই নয়, বরং একজন সম্মানিত নাগরিকের মর্যাদার প্রশ্নেও আঘাত হানে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *