নগদ থেকে দেড়শ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ, প্রাক্তন উপদেষ্টার পিএ আতিক মোর্শেদের বিরুদ্ধে তদন্ত

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আতিক মোর্শেদকে ঘিরে উঠে এসেছে বিস্ফোরক দুর্নীতির অভিযোগ। জনপ্রিয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ (Nagad)’ থেকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, শুধু অর্থ নয়, আতিক মোর্শেদ নাকি প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিজের স্ত্রীসহ আত্মীয়স্বজনদের চাকরি দিয়ে গড়ে তুলেছেন প্রভাব বিস্তারের চক্র।

দুর্নীতির এই বিস্তৃত অভিযোগের তদন্তে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (Anti-Corruption Commission – ACC)। আগেও একাধিক উপদেষ্টার পিএ ও পিএসদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু এবার যে অঙ্কের কথা বলা হচ্ছে, তা রীতিমতো নজর কাড়ছে সাধারণ জনগণ ও বিশ্লেষকদের।

সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুকে তৈরি হয়েছে তীব্র আলোড়ন। সাধারণ মানুষ যেমন হতবাক, তেমনি নীতিনির্ধারক ও বিশ্লেষকরাও এই দুর্নীতির গভীরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) নিজেও এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন,
‘চিন্তা করা যায়! মাত্র কয়েক মাস সুযোগ পেয়ে একটি প্রতিষ্ঠান থেকেই দেড়শ কোটি টাকা লোপাট করেছে! আহা বিপ্লব! আহা চেতনা!’

নুরুল হকের এই মন্তব্যে পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক উপহাস ও দুর্নীতির সংস্কৃতির প্রতি তীব্র বিদ্রুপ প্রকাশ পেয়েছে।

পিএদের প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা

বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে যখন দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র একজন সহকারী নয়, বরং বিভিন্ন উপদেষ্টার অধীনস্থ ব্যক্তিগত সহকারী ও সচিব পর্যায়ের ব্যক্তিরাও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তিগত সম্পদে রূপান্তর করার চেষ্টায় লিপ্ত। প্রশ্ন উঠছে—এই ধরনের অপতৎপরতার দায় কে নেবে?

নগদের মতো একটি বড় জাতীয় ডিজিটাল আর্থিক সেবাপ্রতিষ্ঠান থেকে এভাবে বিপুল অর্থ গায়েব হয়ে যাওয়া প্রশাসনিক দুর্বলতা, নজরদারির অভাব এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ার ইঙ্গিত দেয়।

তদন্তের অগ্রগতি কী?

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হলে আতিক মোর্শেদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একই সঙ্গে চাকরিপ্রাপ্ত আত্মীয়দের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও নথিপত্রও যাচাই করে দেখা হচ্ছে। দুর্নীতির ব্যাপ্তি যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে এই মামলাটি হতে পারে চলমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রতি বড়সড় একটি বার্তা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *