চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষিত সময়সীমা ঘিরে ভিন্নমত ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে প্রায় সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে। অধিকাংশ দল অবিলম্বে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করলেও, কোন কোন দল আবার সংস্কার ও বিচার শেষেই চায় ভোট আয়োজন। নিচে দলভিত্তিকভাবে উপস্থাপন করা হলো দলগুলোর নির্বাচনী সময়সীমা ও অবস্থান:
🟩 ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় যারা:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি (BNP)
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলটি বলছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোট হতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে ডিসেম্বরেই নির্বাচন চেয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
ইসলামী ঐক্যজোট (Islami Oikya Jote)
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট আয়োজন চায়।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (Bangladesh Khelafat Andolon)
ডিসেম্বরে ভোট আয়োজনের পক্ষে।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (Bangladesh Muslim League)
দ্রুত সংস্কার শেষে ডিসেম্বরে নির্বাচন দাবি।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (Jamiat Ulema-e-Islam)
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাইছে।
গণফোরাম (Gano Forum)
সরকারের কাছে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছে ডিসেম্বরের মধ্যে।
এনপিপি (NPP)
ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চায়।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি – বাংলাদেশ ন্যাপ (Bangladesh NAP)
যথাসময়ে নির্বাচন দাবি, ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মেনে নেওয়া যায়।
বিএনপি (কাঁঠাল প্রতীক)
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করে।
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল – বাসদ (BASAD)
যত দ্রুত সম্ভব ভোট আয়োজনের পক্ষে।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (Islamic Front Bangladesh)
সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ চূড়ান্ত করতে চায়, আপত্তি নেই ডিসেম্বরের মধ্যেই।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (Bangladesh Kallyan Party)
ডিসেম্বর বা তার কিছু আগেও নির্বাচন মেনে নেওয়া যায়।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (Bangladesh Islami Front)
সংস্কার না করে ডিসেম্বরেই নির্বাচন দাবি।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (Revolutionary Workers Party of Bangladesh)
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে সরকারের সদিচ্ছার ঘাটতির অভিযোগ তোলে।
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (Bangladesh Cultural Muktijote)
১৫ বছরের ভোটহীনতার পর দ্রুত ভোট দাবি।
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট – বিএনএফ (BNF)
১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দাবি।
বাংলাদেশ কংগ্রেস (Bangladesh Congress)
সংস্কারের পর ভোট, ডিসেম্বর হলে ভালো।
ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ (Insaniyat Biplob Bangladesh)
যত দ্রুত সম্ভব ভোট আয়োজন চায়।
বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জাসদ (JASAD)
নভেম্বর বা ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের আগেই ভোট আয়োজন চাইছে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি – এলডিপি (LDP)
ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি – সিপিবি (CPB)
ডিসেম্বরে ভোট সম্ভব বলে মনে করে, সরকারের সময়ক্ষেপণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জেএসডি (JSD)
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন – এনডিএম (NDM)
ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট দাবি।
গণঅধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad)
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি।
গণসংহতি আন্দোলন (Gonoshonghoti Andolon)
ডিসেম্বরের আগে ভোটের পক্ষ।
🟨 ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন মেনে নেওয়া যেতে পারে:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
সংস্কার ও বিচার শেষের শর্তে ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে ভোট মেনে নিতে পারে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (Islami Andolon Bangladesh)
সংস্কার ও বিচারের পর জুনের আগেই নির্বাচন দাবি।
খেলাফত মজলিস (Khelafat Majlish)
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট চায়। রোজার আগেই সময় নির্ধারণের আহ্বান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
সংস্কার দৃশ্যমান হলে জুনের আগে ভোট গ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল (Bangladesh Muslim League-BML)
ডিসেম্বর থেকে জুন সময়সীমার মধ্যেই ভোট মেনে নেওয়া যেতে পারে।
নাগরিক ঐক্য (Nagorik Oikko)
ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়কে গ্রহণযোগ্য বলেছে।
বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি – বিএমজেপি (BMJP)
জুনের মধ্যেই নির্বাচন চায়।
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (BDP)
ডিসেম্বর-জুন সময়কালকে বাস্তবভিত্তিক বলে মেনে নিয়েছে।
এবি পার্টি (AB Party)
ডিসেম্বরে ভালো, তবে ফেব্রুয়ারি-মার্চও গ্রহণযোগ্য।
🟥 কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই বা আগে সংস্কার/বিচার দাবি:
তৃণমূল বিএনপি (Trinomool BNP)
প্রথমে বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কার, তারপর ভোট। নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (Bangladesh Supreme Party)
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দাবি করলেও নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেনি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (JSD)
রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার শেষ করে ভোট দাবি।
জাতীয় পার্টি (Jatiya Party – লাঙ্গল)
অংশগ্রহণমূলক ভোট চায়, সময় উল্লেখ করেনি।
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (Communist Party of Bangladesh – Marxist)
গণতন্ত্রহীনতার মধ্যে নির্বাচনকে অপ্রাসঙ্গিক মনে করে।
বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (Bangladesh Tariqat Federation)
সদিচ্ছা ও সমতা থাকলে নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যেও সম্ভব বলে মনে করে।
🟦 কোনো মন্তব্য করেনি বা সময়সীমা নির্দিষ্ট নয়:
জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) (Jatiya Party – Manju)
গণতন্ত্রী পার্টি (Gonotantri Party)
আওয়ামী লীগের (Awami League)
বর্তমানে দলটির নিবন্ধন স্থগিত হলেও অন্যান্য দল থেকে এদের বিচার ও নিষেধাজ্ঞার দাবি উঠেছে। নেতৃত্ব পর্যায়ে যোগাযোগ হলেও নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।