বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman) সম্প্রতি গোপনে কাতারের রাজধানী দোহা সফর করেছেন—এমন একটি খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা সরাসরি ‘মিথ্যাচার’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। রবিবার (১ জুন) এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “ডা. শফিকুর রহমান কোথাও যাননি, তিনি সারা সময় দেশেই ছিলেন।”
এ খবরকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর আখ্যা দিয়ে এটিএম মা’ছুম দাবি করেন, “ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহা কিংবা অন্য কোনো দেশ সফর করেননি।” বরং তিনি ২৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দেশের ভেতরেই সক্রিয় ছিলেন বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।
জামায়াত দলীয় বিবৃতিতে শফিকুর রহমানের দেশেই অবস্থানের বিস্তারিত কার্যক্রম উল্লেখ করা হয়েছে। ২৮ মে সকালে তিনি সংগঠনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম-কে শাহবাগ মোড়ে সংবর্ধনা দেন এবং বেলা সাড়ে ১১টায় মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে তার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ওই দিন বিকালে তিনি মগবাজার কাজী অফিস লেনে সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম-এর কবর এবং আজিমপুর কবরস্থানে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও এটিএম আজহারুল ইসলামের স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন।
পরদিন ২৯ মে তিনি সারাদিন বসুন্ধরার নিজ বাসায় অবস্থান করেন এবং রাতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। ৩০ মে ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন এবং বিকেলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
দলটির দাবি, এই বৈঠক এবং কার্যালয়ে তার প্রবেশের সিসিটিভি ফুটেজ চাইলে যাচাই করা সম্ভব। ৩০ ও ৩১ মে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের আয়োজনে দুইদিনব্যাপী কর্মপরিষদ সদস্যদের শিক্ষা শিবিরের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শফিকুর রহমান, যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বক্তব্য পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছে।
৩১ মে সকাল ৭টায় তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৈয়দপুরে যান এবং সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরেন।
সব মিলিয়ে দলটির বক্তব্য, এই ‘গোপন সফর’ সংক্রান্ত প্রচার একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার, যার উদ্দেশ্য জামায়াত আমীরকে বিতর্কিত ও হেয় প্রতিপন্ন করা। এটিএম মা’ছুম বলেন, “আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় রাখছি।”