বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (Anti-Discrimination Student Movement) বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। সংগঠনের জেলা কমিটির মুখ্য সংগঠক হাসিবুল আলম তুরান, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম আবিদ ও সদস্য তাহসিন আহমেদ রাতুল একযোগে পদত্যাগ করেছেন। রবিবার রাতে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ ঘোষণা দেন।
তিন নেতার অভিযোগ, সংগঠনের ভেতরে এখন চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মব তৈরি ও সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির প্রবণতা বেড়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে না জড়ালেও তাঁদের নাম জড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
সংগঠনের মুখ্য সংগঠক পদত্যাগকারী হাসিবুল আলম তুরান বলেন, ‘জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন, যিনি একসময় ছাত্র শিবিরের নেতা ছিলেন, কিছুদিন আগে নগরীতে চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমি এর সঙ্গে জড়িত নই, তবুও আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সংগঠন এখন রাজনৈতিকভাবে দিকনির্দেশনাহীন, অজ্ঞতা ও কৌশলহীনতার শিকার। সমাজে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার বদলে সংগঠনটিই সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে। টেন্ডারবাজি, মামলা বাণিজ্য, এমনকি সাম্প্রদায়িক উসকানিও ছড়াচ্ছে।’ তুরান দাবি করেন, সংগঠনের ভেতরে নারীদেরও হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। ‘নারীরা রাস্তায় নামতে ভয় পাচ্ছেন। তাঁদের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিন নেতা জানান, তারা এই সংগঠনে ছিলেন শহীদ ও আহতদের রক্তের মর্যাদা রক্ষার জন্য। কিন্তু এখন যে পথ সংগঠন নিচ্ছে, তা তাঁদের বিবেক মেনে নিচ্ছে না। ‘আমরা অভিশাপ মুক্ত থাকতে চাই, সে জন্যই পদত্যাগ করেছি,’ বলেন তারা।
এদিকে এই পদত্যাগ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়টি কিছুক্ষণ আগে জেনেছি। দলে যদি কেউ অপকর্ম করে থাকে, তাহলে আগে কেন কেউ প্রতিবাদ করেনি? আমার কাছে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ আসেনি। প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
এই তিন নেতার পদত্যাগে সংগঠনের ভেতরের বিভাজন ও আস্থা সংকট আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষ করে বরিশালের রাজনীতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয়তা এবং তরুণ সমাজে এর প্রভাব নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।