‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই’—জোরালো বার্তা জোনায়েদ সাকির

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি (Zonayed Saki) বলেছেন, বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের একটি স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এখন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া সামনে রেখে চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন সাকি। সেখানে তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি—বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। সরকার নিজেই বলেছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়—এটাই স্বাভাবিক।”

‘সরকারকে ব্যাখ্যা করতে হবে সময় পেছালে কেন’
স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সময়সূচি পেছানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেলে তা সরকারকেই ব্যাখ্যা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন সাকি। তিনি বলেন, “যদি ডিসেম্বরের চেয়ে পরের সময় নির্ধারিত হয়, তবে সরকারের ব্যাখ্যা দিতে হবে কেন অতিরিক্ত সময় দরকার পড়ল।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একটি বৃহত্তর ঐকমত্য তৈরি করতে চাই। প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো আমরা উত্থাপন করেছি এবং এতে আমরা যথাসম্ভব ছাড় দিচ্ছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য তৈরি হবে, তা জুলাই সনদ কিংবা জাতীয় সনদ আকারে উপস্থাপিত হবে।”

‘অমীমাংসিত ইস্যুগুলো জনগণের বিচারে যাবে’
যেসব ইস্যুতে এখনও ঐকমত্য আসেনি, সেগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে জনগণের হাতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। “আলোচনার পরও যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য থেকে যাবে, তা আমরা জনগণের কাছে পৌঁছে দেব। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে দল বিজয়ী হবে, তারাই এসব বাস্তবায়ন করবে।”

‘নির্বাচনের তারিখ নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করুন’
নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা এবং বিচার-সংস্কারের রূপরেখা স্পষ্ট না করায় জনগণের মধ্যে সংশয় বাড়ছে বলে জানান সাকি। “নির্বাচনের জন্য যেসব পরিবেশ দরকার, তা আমরা এখনও আলোচনা করতে পারছি না। কারণ, নির্বাচনের তারিখই যখন স্পষ্ট নয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগে—আসলে আদৌ কি নির্বাচন হবে?”

তিনি মনে করেন, এই অনিশ্চয়তা দূর করার দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার। তার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাকি বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা চাইলে এই সংশয় দূর করতে পারেন। নির্বাচনের তারিখ ও বিচার-সংস্কারের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এখন জরুরি।”

গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে বারবারই স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে—শুধু নির্বাচন নয়, তার আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও ন্যায়বিচারের কাঠামো নিয়েও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা চাই। আর তা না থাকলে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন তারা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *