চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের কর্মসূচিতে এক নারীকে পেছন থেকে লাথি মেরে তীব্র সমালোচনার মুখে বহিষ্কৃত হওয়া জামায়াতকর্মী আকাশ চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। বুধবার (৪ জুন) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক এই জামিনের আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, আকাশ চৌধুরীর পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২ জুন চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উল্লেখযোগ্যভাবে, আকাশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যার ভিত্তিতেই তার গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ঘটনার পটভূমি
২৮ মে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম (ATM Azharul Islam) মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট’ চট্টগ্রামে একটি কর্মসূচি পালন করে।
কর্মসূচি চলাকালে মিছিল নিয়ে আসে ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ নামের একটি সংগঠন। তখন উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে গেলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট অভিযোগ করে যে, ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ এর সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়, যাতে অন্তত ১৫ জন আহত হন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করে এবং নিজেরাই বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে।
ভাইরাল ভিডিও এবং বহিষ্কার
ঘটনার পরপরই ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সংলগ্ন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের সামনে আশ্রয় নিয়েছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সদস্যরা। এক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতির মাঝেই আকাশ চৌধুরী পেছন থেকে এসে একজন নারীকে হঠাৎ লাথি মারেন। এরপর ঘুরে গিয়ে আরেকজন নারীকে আঘাত করেন।
এই নির্মম আচরণ জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং ভাইরাল ভিডিওটি তাকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ৩০ মে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত এক বিবৃতিতে জানায়, আকাশ চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অবশেষে, ২ জুন পুলিশের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ৪ জুন তিনি জামিনে মুক্তি পান।