নতুন রূপে আবারও দৃশ্যপটে ফিরে এসেছে করোনাভাইরাস (Coronavirus)। ‘কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি’ (Covid-Omicron XBB) নামের এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকে আগের কোভিড-১৯-এর চেয়েও শক্তিশালী ও মারাত্মক বলে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যদিও এখন পর্যন্ত যশোরে কেউ এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়নি, তবু জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ স্থানীয়দের সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে।
যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এক্সবিবি ধরনটি সাধারণ ওমিক্রনের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর এবং এটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি বিষাক্ত। ফলে এটি শরীরে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ফুসফুসে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটির লক্ষণগুলোও অত্যন্ত ছলনাময়—জ্বর বা কাশির পরিবর্তে মাথা, গলা, পিঠ ও জয়েন্টে ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য, এমনকি নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
সিভিল সার্জন অফিস জানায়, কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি-তে আক্রান্ত অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শরীরে দৃশ্যমান উপসর্গ না থাকলেও এক্স-রেতে নিউমোনিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। পরীক্ষার ক্ষেত্রেও জটিলতা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে নাকের গহ্বর থেকে নেওয়া সোয়াবে পরীক্ষার ফল অনেক সময় মিথ্যা নেতিবাচক আসছে, যা ভ্যারিয়েন্টটির ধূর্ত স্বভাবের প্রমাণ দেয়। ফলে পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ এলেও তা পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য না-ও হতে পারে।
ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল, যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, “ঢাকা ও রাজশাহীতে ইতোমধ্যে এক্সবিবি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাই এখন থেকেই সচেতন না হলে পরিস্থিতি দ্রুতই খারাপ হতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, “সংক্রমণ রোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো — জনসমাগম এড়িয়ে চলা, মাস্ক ব্যবহার করা এবং অন্তত ১.৫ মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।”
ডা. মাসুদ রানা, যশোরের সিভিল সার্জন, আরও কঠোর নির্দেশনা দিয়ে বলেন, “সাবান-পানি দিয়ে নিয়মিত হাত ধুতে হবে, দরজার হাতল, সুইচ, লিফটের বাটন ইত্যাদি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। এক্সবিবি একটি ভয়ঙ্কর ধরন, তাই জনগণকে এখনই সতর্ক হতে হবে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি সরাসরি ফুসফুসে আঘাত হানে এবং ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে, যা কিছুক্ষণের মধ্যেই শ্বাসকষ্টের চরম অবস্থায় পৌঁছে দিতে পারে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ যে সতর্কবার্তা জারি করেছে, তা কেবল স্থানীয় নয়, বরং জাতীয় পর্যায়েও গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।