পবিত্র ঈদুল আজহার কোরবানি উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় পশু জবাই করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Dhaka Medical College Hospital)-এর জরুরি বিভাগে ১২০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আর হাত-পা ও আঙুল কাটাসহ হাড়ের জটিলতা নিয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল)-এ চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ২০১ জন।
ঈদের দিনের এই চিত্র যেন কুরবানির প্রস্তুতির নানা অনিয়ম, সতর্কতার অভাব ও অদক্ষতা তুলে ধরে। গরুর লাথি, শিং-এর গুতো কিংবা কসাইয়ের ছুরি হাতে অসতর্কভাবে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই ভয়াবহ আঘাত পান।
ঢামেক হাসপাতাল-এর পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, আজ শনিবার কোরবানি দিতে গিয়ে গরুর ধাক্কা, লাথি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ১২০ জন হাসপাতালে আসেন। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে পঙ্গু হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২০১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বা চিকিৎসা নিয়েছেন যাঁরা কোরবানির পশু কাটাকাটি বা সামলানোর সময় আঘাত পান। ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. অভিজিৎ চৌধুরী জানান, “বেশিরভাগ রোগীরই হাত ও পায়ের আঙুলে কাটা ও হাড়ভাঙা জাতীয় আঘাত। আমাদের জরুরি বিভাগ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে সবাইকে চিকিৎসা দিতে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেশাদার কসাই ছাড়া পশু জবাই বা কাটাকাটির কাজ করার সময় সাধারণ মানুষ যদি সতর্ক না থাকেন, তাহলে এমন দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রতিবার ঈদেই বাড়বে।
এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকেও জনসচেতনতা বাড়ানো, এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের তদারকি বাড়ানো এবং কসাইদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।