প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন আগামী ১০ জুন। সফর শেষ হবে ১৩ জুন। এই সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়—লন্ডনে থাকা তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর সঙ্গে তার সম্ভাব্য বৈঠক। যদিও এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, তবুও জল্পনা-আলোচনার কোনো কমতি নেই।
ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম স্পষ্ট করেছেন, “তারেক রহমান বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতা। যদি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার লন্ডনে বৈঠক হয়, সেটি দেশের জন্য পজিটিভ মেসেজ পাঠাতে পারে।” তবে তিনি একইসঙ্গে সতর্ক করে বলেন, “বৈঠক হবে কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। লন্ডনে গিয়ে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক হতে পারে বড় ধরনের একটি বার্তা। একদিকে ড. ইউনূস নিজেকে রিফর্ম ও ফেয়ার নির্বাচন নিশ্চিতের মুখ হিসেবে উপস্থাপন করছেন, অন্যদিকে লন্ডন-নিবাসী তারেক রহমান বহুল আলোচিত বিরোধী দল বিএনপি-র নেতৃত্বে রয়েছেন। এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির একত্র হওয়া—তা সরাসরি বৈঠক হোক কিংবা অনানুষ্ঠানিক—বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথে নতুন ধারা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশেষত, চলমান নির্বাচনপূর্ব আলোচনা, বিচারিক প্রক্রিয়া ও সংস্কারের বিষয়ে ড. ইউনূস সরকারের ‘মূল ম্যান্ডেট’ হিসেবে যে রূপরেখা দিয়েছেন, তার সফল বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনা হতে পারে একটি মোড় ঘোরানো পদক্ষেপ।
বৈঠক হলে বার্তা কী হতে পারে?
প্রেস সচিবের মন্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, এই সম্ভাব্য বৈঠক শুধুই সৌজন্য বা ব্যক্তিগত নয়—বরং এটি হতে পারে জাতীয় স্বার্থে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সংলাপ। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ বা সূচি প্রকাশ করা হয়নি।
লন্ডনে উভয়ের অবস্থান, দেশের ভেতরে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণকারীদের দৃষ্টি—এই সবকিছু মিলিয়ে ড. ইউনূস ও তারেকের মধ্যে একটি আলোচনার সম্ভাবনা স্বাভাবিকভাবেই নানা জল্পনা তৈরি করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত এই বৈঠক হবে কি না, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।