নিষিদ্ধ আ’লীগের কর্মীর হাতে নিহত বিএনপির কর্মী

যশোরের শার্শা উপজেলায় রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই খুন হলেন এক বিএনপি (BNP) কর্মী। নিহত লিটনের পরিবারের দাবি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ (Awami League) কর্মীরাই পরিকল্পিতভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে, বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

নিহত ব্যক্তি লিটন (৩৫), শার্শার লক্ষণপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবা আজগার আলী জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাজারে একটি ঠেলাগাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন লিটন। হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের সমর্থিত একটি দল এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তাকে। রাত ১১টার দিকে যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

লিটনের বাবা আরও বলেন, “এই আগেও আওয়ামী লীগ সময় আমার ছেলেকে মারধর করেছিল। এখন তো খুনই করে ফেলল। আমি এর বিচার চাই।”

ঘটনার পরদিন বুধবার, আজগার আলী বাদী হয়ে শার্শা থানায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, হত্যাকারীদের মধ্যে রয়েছে সেলিম, মোমিন, রমজানসহ আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মী। পুলিশ এরই মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে—তারা হলেন লক্ষণপুর গ্রামের আকবার আলী ও সামসের আলী।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়। “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।

আবুল হাসান জহীর, শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি, জানান, নিহত লিটন দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, “যারা খুন করেছে, তারা সকলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য। লিটন আগে থেকেই তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ছিল।”

উল্লেখ্য, এর আগেও ঈদের দিন শার্শার পাশের ইউনিয়নে ককটেল হামলায় নিহত হন আরেক বিএনপি কর্মী আব্দুল হাই। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে শার্শায় তিনটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত ৫ জুন নাভারণ খাজুরা এলাকায় নেহা সবুজ হোসেন নামে আরও একজন খুন হন।

একাধিক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে রক্তাক্ত হয়ে উঠছে যশোরের শার্শা উপজেলা। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের এখনই জবাবদিহি প্রয়োজন, নইলে শঙ্কা শুধু বাড়বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *