সরকার গঠনে ড. ইউনূসকে পাশে চায় বিএনপি, তারেকের সঙ্গে বৈঠকে মিলেছে ইঙ্গিত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)-এর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। লন্ডনে অনুষ্ঠিত দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে নির্বাচন, বিচার সংস্কার এবং ভবিষ্যৎ সরকার গঠন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপির (BNP) শীর্ষ নেতারা।

বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, দলটি সরকার গঠন করতে পারলে ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং ভাবমূর্তি কাজে লাগাতে চায়। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা ড. ইউনূসকে বলেছি, অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চায় আমরা তার সহায়তা চাই। তিনি সরাসরি সম্মতি দিয়েছেন কি না জানি না, তবে তার গুরুত্ব নিশ্চয় অনুধাবন করেছেন।”

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য হাফিজউদ্দিন আহমদ বলেন, “সংস্কারমূলক যেসব বিষয়ে দল ও সরকার একমত, সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই শুরু হবে। বাকিগুলো নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে। বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেছেন। বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী বিএনপি, তাই দ্রুত বিচারই আমাদের অগ্রাধিকার।”

বৈঠকে শুধু নির্বাচন নয়, অন্তর্বর্তী সময়ের ‘বিশ্বস্ত’ নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে আয়োজনের প্রস্তাব দিলে সরকার এতে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে।

তবে আলোচনায় শুধু ভোটের সময় নয়, অন্তর্বর্তী সরকারে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ নিয়েও কথা উঠেছে। বিএনপি শুরু থেকেই নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে আসছে। যদিও বৈঠকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এর আগেও বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ অংশ নিয়েছিলেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, পদত্যাগ দাবি থেকে কি পিছিয়ে আসছে বিএনপি?

এ বিষয়ে হাফিজউদ্দিন আহমদ কৌশলী জবাবে জানান, “আমরা এখনও তাদের পদত্যাগের দাবিতে অনড়। বিষয়টি সরকারকে জানানো হয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা সরকারের।”

সালাহউদ্দিন আহমদ যোগ করেন, “এই সরকার অন্তর্বর্তী হলেও এর নামের সঙ্গে ‘নিরপেক্ষ’ শব্দটি আছে। তাই নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দায়িত্বও সরকারেরই।”

বৈঠক এবং এর ফলাফল নিয়ে দলের অভ্যন্তরে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনি রাজনৈতিক মহলেও বিষয়টি গভীর আগ্রহের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির এই নতুন সম্পর্ক ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *