ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে প্রথমবারের মতো একটি আনুষ্ঠানিক সভা করলেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)। সোমবার (১৬ জুন) অনুষ্ঠিত এই সভার ব্যানারে তাঁকে ‘মাননীয় মেয়র’ হিসেবে পরিচয় করানো হয়, যা ঘিরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
সকালে নগর ভবনের কনফারেন্স রুমে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন ইশরাক। পরিচ্ছন্ন ঢাকা এবং নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে এই সভা বলে জানান আয়োজকরা।
সভায় ইশরাক হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধিত করেন কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ইশরাক বলেন, “এই আন্দোলন চললেও নাগরিক সেবা চলমান ছিল। জনগণের দুর্ভোগ যেন চরমে না পৌঁছায়, সে চেষ্টা ছিল সবসময়।”
তিনি জানান, মশা নিধন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে এবং মঙ্গলবার (১৭ জুন) ৭০টিরও বেশি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ওয়ার্ড মনিটরিং কমিটি’ গঠনের ঘোষণা দিয়ে ইশরাক বলেন, “জন্ম, মৃত্যু ও ওয়ারিশ সনদের সেবা সচিবদের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে চলবে। আগামী পরশুদিন স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে বসে সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আলোচনা করবো।”
সভায় নিজের মেয়রত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইশরাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গেজেট প্রকাশের পর থেকেই আমাকে নগর ভবনে ঢুকতে না দিতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অথচ আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আজও সরকারের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আসিফ মাহমুদের পিএস শত কোটি টাকার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।”
এমন অবস্থায় নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখতে ইশরাক রোববার ঘোষণা দিয়েছিলেন, “প্রধান ফটকে তালা থাকবে, কিন্তু জরুরি সেবা আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে।” সেই ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার তিনি নগর ভবনে এসে কর্মসূচি পালন করেন এবং দিনভর সেবা কার্যক্রম নিয়ে সিদ্ধান্ত জানান।
একইসঙ্গে, নগর ভবনের সামনে তাঁর সমর্থকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তাঁকে ডিএসসিসির ‘বৈধ মেয়র’ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনাপ্রবাহ শুধুই স্থানীয় সরকারের একক ইস্যু নয়, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নির্বাচনী বৈধতা ঘিরে বিএনপির বৃহত্তর রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ।