সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আবারও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩৪ জন, তবে এ সময় কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একই সময়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার (১৬ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ জনেই স্থির রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ১১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে, ঢাকা বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রামে ২৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ২৮ জন, এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ১৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহী ও খুলনায় ৫ জন করে ১০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ডিএসসিসি এলাকায়—মোট ১৫ জন। বরিশালে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের, চট্টগ্রামে ৩ জন, খুলনায় ২ জন এবং ডিএনসিসি, ময়মনসিংহ ও ঢাকায় একজন করে।
এদিকে, একই সময়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজন মারা গেছেন, যা নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩১টি নমুনা পরীক্ষায় ২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, শনাক্ত হার ১০.৮২ শতাংশ।
ঢাকায় ৫০টি নমুনা পরীক্ষায় ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রামে ১২০টি পরীক্ষায় শনাক্ত ১০ জন। এছাড়া, কক্সবাজারে ১০টি পরীক্ষায় একজন, রাজশাহীতে ৩১টিতে ৯ জন এবং সিলেটে ৫টি পরীক্ষায় একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
করোনার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “বর্তমান রোগীর চাপ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু দেখছি না।” তিনি আরও জানান, নমুনা পরীক্ষা তিনটি মাধ্যমে চলছে এবং ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ নিয়েও কথা বলেন ডা. সায়েদুর রহমান। তাঁর ভাষায়, বরিশাল ও ঢাকায় এডিস মশার বিস্তার বেশি। “এটি দোষারোপ নয়, তবে স্থানীয় সরকারের মশক নিধন কার্যক্রম প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টিম কাজ করছে এবং নতুন গাইডলাইনও তৈরি করা হয়েছে, যা শিগগির প্রকাশ করা হবে।
রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় গ্যাস্ট্রো লিভার ইনস্টিটিউট ও জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনের পর তিনি জানান, গ্যাস্ট্রো লিভারে আধুনিক ব্যবস্থা ও সেবার মান সন্তোষজনক হলেও বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে কাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে। জনবল সংকট ও ভবন সংস্কারের বিষয়টি দ্রুত সমাধান প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. আবু জাফরসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।