ইউনুস স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলব, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তারপর রোডম্যাপ দেবেন

বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) জানিয়েছেন, বিএনপি ছাড়া দেশে আর কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে কঠোর অবস্থানে নেই। তার ভাষ্য অনুযায়ী, মাঠ পর্যায়ে বিএনপির আচরণ দেখে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থান বুঝে নিয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) পটুয়াখালী পৌর শহরের নতুন বাজারস্থ জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে এক ঈদোত্তর শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির সঙ্গে সহাবস্থানে থেকে আগের দেওয়া বক্তব্যের জন্য ঢাকায় গিয়ে ইউনুস স্যারের কাছে ক্ষমা চাইব। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে তবেই রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।”

নুর বলেন, এখন আর কেন্দ্র দখল করে জোর করে এমপি বা চেয়ারম্যান হওয়া সম্ভব নয়। সময় যত লাগুক, পরিবর্তন আনতে হবে সরকারেই। কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত হবে।

তিনি আরও বলেন, “গণঅধিকার পরিষদকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। গত সাত বছরে আমরা যা করেছি, তা গত ৭০ বছরের ইতিহাসে হয়নি।” এসময় তিনি দলটির কেন্দ্রীয় অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলাম ফাহিমকে পটুয়াখালী-১ আসন থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন।

উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

তবে এর পেছনে আছে কিছু বিতর্ক ও উত্তেজনার রেশও। গত ১২ জুন রাতে পটুয়াখালীর গলাচিপায় নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই রাতে পাতাবুনিয়া এলাকায় এক স্মরণসভা থেকে ফেরার পথে তাকে গাছ ফেলে, গুলতি, লোহার রড, রামদা নিয়ে আটকে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি নিজেই।

ঘটনার পর রাত ১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। সেই সময় নুর অবস্থান করছিলেন পাতাবুনিয়া বাজারে।

ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে নুরুল হক নুর তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, “বিএনপি নেতা হাসান মামুন (Hasan Mamun)-এর অনুসারীরা পরিকল্পিতভাবে রাস্তা অবরোধ করে আমাদের গতি রোধ করে। আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে দুইটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে, আর কয়েকজনকে মারধর করে।”

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন বলেন, “নুর এলাকায় এসে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। বুধবার তিনি একটি ঠিকাদারি কাজকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতার নাম জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করেছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার চরবিশ্বাস বাজারে তার কর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। স্থানীয়দের ক্ষিপ্ত করে তুলছে এসব কর্মকাণ্ড।”

নির্বাচন ঘিরে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা ধীরে ধীরে তীব্র হয়ে উঠছে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সেটাই যেন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *