এবি পার্টি (AB Party)–এর চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু (Mozibur Rahman Monju) জানিয়েছেন, ঐকমত্য কমিশনের চলমান বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ৩২টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিস্তৃত আলোচনা হলেও এখনো কোনও সিদ্ধান্তমূলক ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। সভা শেষে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “ভালো আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু দুঃখজনকভাবে কোনও বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে উঠছে না।”
মঞ্জু বলেন, কয়েক মাস ধরে দলগুলোর আলাদা করে বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ ছিল। তারপর গত তিন দিন ধরে সম্মিলিতভাবে আলোচনার মধ্যেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ বা এনসিসি গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কেউই চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। “জনগণ চায় আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাই, কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা তা পারছি না,”— বলেন তিনি।
তার মতে, দীর্ঘদিন ধরে যারা রাষ্ট্রব্যবস্থার নিপীড়নে ভুগেছেন তারা এখন পরিবর্তনের আশা করলেও বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা যেন সে আশাকে ধাক্কা দিচ্ছে। বিশেষ করে যখন সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো গঠনমূলক উদ্যোগ নিতে অনাগ্রহী থাকে, তখন সাধারণ মানুষের হতাশা স্বাভাবিক।
সভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে এবি পার্টির অবস্থানও স্পষ্ট করেন মঞ্জু। তার ভাষায়, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার চেয়ে মর্যাদার দিকটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। “তিনি জাতির ঐক্যের প্রতীক হওয়ার কথা, অথচ প্রচলিত পদ্ধতিতে একজনকে শুধু পা ছুঁয়ে সালাম করলেই রাষ্ট্রপতি বানানো যায়।” এ অবস্থার পরিবর্তন দাবি করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সংসদের বাইরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ইলেকটোরাল কলেজ গঠনের প্রস্তাব এবি পার্টি সমর্থন করে।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণের বিষয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক (Barrister Sani Abdul Haque) বলেন, “আমরা চাই না বাংলাদেশে আর কখনো কর্তৃত্ববাদ ফিরে আসুক। এজন্য একজন ব্যক্তি যেন সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি বিরামহীনভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, তা সংবিধানে নিশ্চিত করতে হবে।”
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন সংস্কৃতি না থাকলেও জাতীয় ঐকমত্যের লক্ষ্যে এবি পার্টি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে এ ব্যবস্থাকে সমর্থন করছে।
সার্বিকভাবে এবি পার্টির নেতারা বলছেন, জনগণের আস্থাকে পুঁজি করেই রাজনীতিতে আসা দরকার, এবং সেই আস্থা অর্জনের অন্যতম পথ হল একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় ঐকমত্য।