রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপন ভোটের পক্ষে বিএনপি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়েও মত স্পষ্ট

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিদ্যমান পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেয়ার প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি (BNP)। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঐকমত্য কমিশনের (Consensus Commission) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed)।

সালাহউদ্দিন বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেক্টোরাল পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন মত দিলেও বেশির ভাগই উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষের সদস্যদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে। যদি সব দল একমত হয়, বিএনপিও গোপন ভোটের পক্ষেই থাকবে।”

তিনি জানান, গত তিন দিনের আলোচনায় ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদের স্থায়ী কমিটি, নারী আসন ও প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে এনসিসি (ন্যাশনাল কনসেন্সাস কাউন্সিল) ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও গুরুত্ব দিয়ে কথা হয়েছে, যার কোনো চূড়ান্ত সমাধান এখনো আসেনি।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, নির্বাচিত হবার পদ্ধতি এবং দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী, সরাসরি নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি উচ্চকক্ষের ১০০ জন ও নারী আসনের ১০০ জন প্রতিনিধির ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ধারণা রাখা হয়।

তবে বিএনপি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাবিত পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে আপার হাউজের ভোট গ্রহণকে সমর্থন করেনি। সালাহউদ্দিন বলেন, “পিআর পদ্ধতিতে অর্ধেক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়াও কঠিন হয়ে যাবে। তাই এটি আমরা সমর্থন করি না।”

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, “টানা দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না—এ রকম সাংবিধানিক সীমা নির্ধারণ করতে হবে। স্বৈরাচার প্রতিরোধে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা জরুরি। সেক্ষেত্রে আলাদা করে এনসিসি গঠনের প্রয়োজন পড়বে না।”

তিনি আরও যোগ করেন, “৭০ অনুচ্ছেদ খুলে দিলে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এতে গোপন ভোটের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে।”

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও সংসদ কাঠামো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতভেদ থাকলেও বিএনপি তাদের অবস্থান ক্রমশ স্পষ্ট করছে—গোপন ব্যালটে বিশ্বাস, স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রত্যাশা এবং প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদ নির্ধারণের প্রস্তাব তাদের নীতির অংশ বলেই ইঙ্গিত মিলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *