আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারপদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার আর প্রার্থীরা পোস্টার ব্যবহার করতে পারবেন না—তাদের প্রচারণা সীমাবদ্ধ থাকবে ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন, হ্যান্ডবিল এবং অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (Abul Fazal Md. Sanaullah)।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এই সিদ্ধান্ত জানান তিনি। এসময় ইসি সচিব মো. আখতার আহমেদ ও এনআইডি ডিজি এসএম হুমায়ুন কবীর উপস্থিত ছিলেন।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। তবে এটি কার্যকর হবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের পর।’
তিনি যোগ করেন, ‘সংসদ নির্বাচনের প্রচারে পোস্টার থাকছে না। তবে প্রার্থীরা বিলবোর্ড, ব্যানার, হ্যান্ডবিল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে প্রচারণা চালাতে পারবেন। বিদেশি অর্থায়নে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা করা যাবে না।’
প্রচারণায় স্বচ্ছতা ও সাম্য নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত, জানান কমিশনার।
আচরণবিধির খসড়ায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিধিমালায় “অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি উপদেষ্টা পরিষদ”কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, যেসব প্রার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে রয়েছেন, তাদেরকে প্রার্থী হওয়ার আগে সেই পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’
এছাড়া তিনি জানান, “রিটার্নিং কর্মকর্তারা একটি কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবেন, যেখানে সংশ্লিষ্ট আসনের সব প্রার্থী তাদের ইশতেহার জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে পারবেন।”
প্রার্থিতা বাতিল সংক্রান্ত বিষয়েও স্পষ্টীকরণ এসেছে। আরপিও’র ৯১/ঙ ধারাটি আচরণবিধিতে সংযোজন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে অনিয়ম বা বিধিভঙ্গের কারণে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত সহজতর হবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী নির্বাচনে পোস্টারবিহীন, পরিবেশবান্ধব এবং প্রযুক্তিনির্ভর এক প্রচারণা ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি, বিদেশি প্রভাব ও অর্থায়ন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজর থাকবে বলেও জানিয়েছেন ইসি সদস্যরা।