গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) রোববার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কড়া ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে কিয়ামত পর্যন্তও শতভাগ ঐকমত্য হবে না।” রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে বিরতির সময় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
নুর বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান থেকে অনেক কিছুতেই ছাড় দিচ্ছি, শুধু ঐকমত্যের জন্য। কিন্তু দু-তিনটি দল এখনো রিজিড পজিশনে আছে, একচুলও নড়ছে না।” তিনি মনে করেন, এমন অবস্থায় রাজনৈতিক ঐকমত্য পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
নুর আরও বলেন, “ঐকমত্যে পৌঁছাতে হলে একটা নির্দিষ্ট মাপকাঠি দরকার। ভগ্নাংশ হোক আর সম্পূর্ণ হোক, কেউ যেন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন—এই প্রস্তাব আগে থেকেই আলোচনায় ছিল।”
তিনি জানান, এখন আরও নতুন নতুন বিষয় আলোচনায় আসছে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় সংলাপ কেন্দ্রিক গঠিত এনসিসি (National Consensus Commission), দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি।
এ সময় সংলাপে অংশ নেওয়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (Revolutionary Workers Party) এর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক (Saiful Haque) বলেন, “আমরা আলোচনা করছি কীভাবে সংবিধানকে আরও বেশি জবাবদিহিমূলক ও ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ কাঠামোতে রূপান্তর করা যায়।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি পুরো বিষয়টি একটি ‘প্যাকেজ চুক্তি’র মতো করে আলোচনা করতে আগ্রহী। তবে এখনো গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু আলোচনা বাকি রয়েছে।
সাইফুল হক বলেন, “আগামী দুদিন সংলাপে বিরতি থাকবে। তারপর আবার বৈঠক শুরু হবে। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে বোঝাপড়া তৈরির চেষ্টা চলছে।”
রাজনীতির মাঠে ‘ঐকমত্য’ শব্দটি ঘিরে চলমান আলোচনা যতটা আশা জাগিয়েছে, বাস্তবে সেই ঐকমত্য অর্জন যেন আরও দূরে সরে যাচ্ছে—এমন বার্তাই যেন দিয়ে গেল এই দিনের সংলাপ।