মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত রাজনীতিক মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব (Mohammad Foysal Biplob)–কে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (Dhaka Metropolitan Detective Branch)। রোববার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মনিপুরীপাড়ায় অবস্থিত নিজ বাসা থেকে রাত ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
ডিবি (DB)–এর যুগ্ম কমিশনার নাসরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ফয়সালের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জে দায়েরকৃত একাধিক মামলা রয়েছে। ঢাকায় তার নামে নতুন কোনো মামলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত মুন্সীগঞ্জের মামলার প্রেক্ষিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন, রাজনীতি ও আত্মগোপনের পটভূমি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের বড় ছেলে ফয়সাল বিপ্লব আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃনাল কান্তি দাস (Mrinal Kanti Das)–এর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। নির্বাচনের আগে তিনি দুইবারের পৌর মেয়র ছিলেন এবং মেয়রের পদ ছেড়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। ফয়সাল ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির একজন সদস্য।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করলে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে পরদিন, ৪ আগস্ট, মুন্সীগঞ্জে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা চালান। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই সময়ের গোলাগুলিতে তিনজন নিহত হন এবং শতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধসহ গুরুতর আহত হন।
একাধিক হত্যা মামলায় প্রধান আসামি
এ ঘটনার পর মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হয় তিনটি পৃথক হত্যা মামলা এবং একটি হত্যাচেষ্টার মামলা। প্রতিটি মামলায় মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবকে ‘হুকুমের আসামি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এছাড়া ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলাকালে নিহত রিয়াজুল ফরাজীর মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী রুমা বেগম বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফয়সালসহ প্রায় ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়সাল আত্মগোপনে চলে যান।
তার গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আলোচিত এই মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়ায় নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
