মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা ঘনিয়ে আসায় হরমুজ প্রণালীতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইরানে মার্কিন বিমান হামলার পর রবিবার (২২ জুন) বিশাল আকারের দুটি সুপারট্যাংকার হঠাৎ দিক পরিবর্তন করে ফিরে যায় বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ (Bloomberg)। খবরে বলা হয়েছে, এই ঘটনা যুদ্ধ পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনায় তেল পরিবহন রুটে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
‘কসউইজডম লেক’ এবং ‘সাউথ লয়্যালটি’ নামের ট্যাংকার দুটি ছিল একেবারে খালি, তবে প্রতিটি জাহাজ প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিবহনের সক্ষমতা রাখে। হরমুজ প্রণালীতে প্রবেশ করার পর তারা কোনো পূর্ব ঘোষিত নির্দেশনা ছাড়াই হঠাৎ ইউটার্ন নেয়।
আলজাজিরা (Al Jazeera)-র বরাতে জানা গেছে, ব্লুমবার্গ তাদের জাহাজ ট্র্যাকিং ডেটা বিশ্লেষণ করে বলেছে, এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে আরও জাহাজের গতিপথ পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এখন ব্যবসায়ী ও ট্যাংকার মালিকরা সতর্ক নজর রাখছেন—এই অস্থিরতা তেল প্রবাহ এবং নৌ চলাচলে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।’’
উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালী নিয়ে ইরান (Iran) দীর্ঘদিন ধরে কৌশলগত হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের দাবি, প্রয়োজন হলে তারা এই প্রণালী বন্ধ করে দেবে। এই প্রণালীই উপসাগরীয় অঞ্চলের সাথে বিশ্ববাজারে জ্বালানি পৌঁছানোর একমাত্র জলপথ। মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন—EIA—এর মতে, বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশই এই পথ দিয়ে পাড়ি জমায়। প্রতিষ্ঠানটি হরমুজ প্রণালীকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহন চোকপয়েন্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে—পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? হরমুজ প্রণালীর ভবিষ্যৎ কী শুধু কূটনৈতিক চাপেই নির্ধারিত হবে, নাকি সামনে অপেক্ষা করছে আরও বড় ধরনের সংঘর্ষ?