আমাকে বুকে গুলি করুন, তবে আর কাউকে ছুরি মারবেন না: নগর ভবন হামলার পর আসিফ ভূঁইয়াকে ইশরাক হোসেন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে সহিংস হামলার পর নিজেকে সামনে এনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain) জানিয়েছেন, “আমাকে গুলি করুন, কিন্তু আমার পক্ষে দাঁড়ানো মানুষদের আর ছুরি মারবেন না।” মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে তিনি সরাসরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আসিফ ভূঁইয়াকে (Asif Bhuiyan) উদ্দেশ করে এ কথা বলেন।

ইশরাক লেখেন, “প্রয়োজনে আমাকে ধরে নিয়ে বুকে গুলি চালান। কিন্তু আমার পক্ষ হয়ে দাঁড়ানো কাউকে আর ছুরি মারবেন না।” তার এই বক্তব্য শুধু আত্মত্যাগের প্রতিচ্ছবি নয়, বরং আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ স্বরূপ রক্ষা করার এক প্রকার আকুতি হিসেবেও প্রতিভাত হয়।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Dhaka Medical College Hospital) নগর ভবনের সহিংসতায় আহতদের দেখতে গিয়ে ইশরাক অভিযোগ করেন, “নগর ভবনে যে হামলা হয়েছে তা ছিল পরিকল্পিত। এর মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ নাগরিক সেবা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।”

তিনি আরও বলেন, “ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্দোলনকে স্থায়ীভাবে স্তব্ধ করে দেওয়া। যারা এই হামলার পেছনে আছে, তারা যে-ই হোক, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”

‘ফ্যাসিস্টদের দোসররা’ এই হামলার পেছনে রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ইশরাক। তার ভাষায়, “নাগরিকদের স্বার্থে যখন সেবা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন থেকেই আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়। কিন্তু আমরা সব বাধা পেরিয়ে সেই সেবা চালু করি।”

তিনি জানান, গত দুই দিন ধরে চালু থাকা এই কার্যক্রমে নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছিল। আর সেটিই সহ্য করতে না পেরে ‘প্রতিপক্ষরা’ নতুন কৌশলে চক্রান্ত বাস্তবায়ন করেছে বলে তার দাবি।

“আজ আমার নামে স্লোগান দিয়ে ফ্যাসিস্টদের উচ্ছিষ্ট সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নগর ভবনে হামলা চালায়। যারা এতদিন আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন, তাদের হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলা হয়।”

হামলাকারীদের উদ্দেশ্য নিয়ে ইশরাক বলেন, “তারা এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করেছে—একদিকে আমার নাম ব্যবহার করে সেবার পরিবেশ বিনষ্ট করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করা, অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের এই ভয়াবহ হামলার মাধ্যমে একটি বার্তা দেওয়া, যাতে তারা আর ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সাহস না পায়।”

নগর ভবনে এ সহিংস ঘটনার মাধ্যমে আন্দোলন দমন এবং বিভ্রান্তি ছড়ানোর যে অপচেষ্টা চলছে, তার বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন। এ অবস্থায় তার ফেসবুক স্ট্যাটাস জনমনে প্রশ্ন তোলে—আন্দোলনের দাবিগুলো কি ক্রমেই আরও জোরালো হবে, নাকি ভয়ভীতির মুখে আরও কেউ পিছিয়ে পড়বে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *