বাকী টাকা দিবে জসিম, কেবিন বয়কে বলেছিল ঈপ্সিতা, কে এই ‘জসিম’ যাকে নিয়ে ছড়াচ্ছে রহস্য

ভোলা সরকারি কলেজের ছাত্রী ও ছাত্রদল কর্মী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর লক্ষ্মীপুর এলাকায় মেঘনা নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা, তা নিয়ে এখনো তেমন কোনো তথ্য মেলেনি। পুলিশও এখন পর্যন্ত কোনো কিনারা পায়নি। তবে এ মৃত্যুর কারণ খুঁজতে ভোলা ও লক্ষ্মীপুর পুলিশ তদন্ত করছে। ফলে মৃত্যুর রহস্য নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল।

এই মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে লক্ষ্মীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। তবে মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় তাঁর বাবা ভোলা সদর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

এদিকে ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার মৃত্যু খবরে এলাকায় তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব নেটিজেনরা।

কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ রাসেল হৃদয় বলেন, ‘১৭ জুন ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে কর্ণফুলী-৪ লঞ্চে ওঠেন সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। পরে তিনি আমার কাছে একটি কেবিন চান। আমি তখন লঞ্চের কেবিন বয় শান্তকে কেবিন দেখাতে বলি। কেবিন বয় শান্ত মেয়েটিকে লঞ্চের তৃতীয় তলার ৩৫৯ নম্বর সিঙ্গেল কেবিন (বাথরুমসহ) দেখায়। কেবিনটি মেয়েটির পছন্দ হলে কেবিনের ভাড়া জানতে চান। শান্ত ৩৫৯ নম্বর কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৫০০ টাকা বললে মেয়েটি জানান এত টাকা তাঁর কাছে নেই। মেয়েটি বলেন, ‘‘আমার কাছে মাত্র ৩০০ টাকা আছে। বাকি টাকা দেবে জসিম।’

সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার বাবা বলেন, ‘জসিম নামের আমার কোনো আত্মীয় নেই। ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জসিমউদদীনও আমার কোনো আত্মীয় হয় না।’

জানা গেছে, ভোলা জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নামও মো. জসিম উদ্দিন। জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এতে প্রশ্ন দেখা দেয়, মেয়েটি যে জসিমের নাম বলেছেন, সেই জসিম আসলে কে?

ইপ্সিতার আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের খুঁজছে পুলিশ, ছাত্রদলের বিক্ষোভ

কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ রাসেল হৃদয় বলেন, ‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম কর্ণফুলী-৩ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ জসিম। তখন আমি জসিমকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনো কেবিনের জন্য কাউকে পাঠাইনি।’ শেষ মুহূর্তে ওই কেবিন আর নেওয়া হয়নি কলেজছাত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার।’

এ বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. জসিম উদ্দিনের মোবাইলে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আল-আমীন হাওলাদার বলেন, ‘ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রদল কর্মী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার সঙ্গে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম উদ্দিনের কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল কি না, তা আমার জানা নেই। তবে দলীয় সম্পর্ক ছিল।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *