ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমা হামলার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করে জাতিসংঘ (United Nations)-এ অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ (Saeed Khatibzadeh) জানিয়েছেন, এই হামলায় যে ক্ষতি হয়েছে তার দায় নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে এবং ক্ষতিপূরণও দিতে হবে ওয়াশিংটনকে।
বুধবার (২৫ জুন) আল-মায়াদিন টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাতিবজাদেহ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বোমা ফেলে আমাদের স্থাপনাগুলোর ক্ষতি করেছে, তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমরা জাতিসংঘে এর যথাযথ অভিযোগ আনছি।”
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আগ্রাসন শুরু করে। এর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে পাল্টা প্রতিশোধ নেয় তেহরান। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে চলতে থাকে ধারাবাহিক পাল্টাপাল্টি হামলা।
এই উত্তেজনার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ২২ জুন ভোরে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বি-২ বোমারু বিমান দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এর জবাবে পরদিন সন্ধ্যায় ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদ (Al Udeid) ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও ২৪ জুন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ঘোষণা দেন, ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলও এ সিদ্ধান্তে একমত প্রকাশ করে। তবে ইরান জানায়, কোনো লিখিত সমঝোতা হয়নি। তাদের মতে, তেল আবিব আগ্রাসন বন্ধে বাধ্য হয়েছে, ফলে এটিই ইরানের বিজয়।
খাতিবজাদেহ বলেন, “২৪ জুন কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি মূলত যুদ্ধ শেষ করেছে। এই যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র থেকেই এসেছিল। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলেছিলাম—যতক্ষণ না আগ্রাসন বন্ধ হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির বিষয় বিবেচনাই করব না।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইরানি জাতি প্রতিরোধের মাধ্যমে জায়নিস্ট সরকারের ওপর নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিয়েছে। কোনো লিখিত চুক্তি ছাড়াই তারা আমাদের হামলার আশঙ্কায় পিছু হটেছে।”
তেহরান জানিয়ে দিয়েছে, তারা এখন আর আগ্রাসনে যাবে না, তবে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও আইনি লড়াই অব্যাহত থাকবে।