‘ছাত্রলীগ পুনর্বাসনে শিবির-গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট’—অভিযোগ ছাত্রদল সভাপতির

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব (Rakibul Islam Rakib) অভিযোগ করেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগকে ‘পুনর্বাসনে’ সরাসরি ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির (Islami Chhatra Shibir) ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায় এখন ‘অন্যরা কাঁধে তুলে নিচ্ছে’, যা রাজনীতিতে বিপজ্জনক বার্তা দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল ৩টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মুক্তমঞ্চে আয়োজিত ছাত্রদলের মাসব্যাপী সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাকিব।

তিনি বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রলীগ নামক সংগঠনটি একসময় চাঁদাবাজি, হামলা, গুলি চালানোসহ বহু অপরাধে জড়িত ছিল। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যারা গুলি চালিয়েছিল, সেই একই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এখন পুনর্বাসনের কাজ করছে ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ।”

তিনি আরও দাবি করেন, বাংলা কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান সাকিব সম্প্রতি একজন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়াতে পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। “এর মাধ্যমে বোঝা যায়, তারা আজ একই ছাতার নিচে অবস্থান করছে”, বলেন রাকিব।

ছাত্রদল সভাপতি অভিযোগ করেন, বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি অতীতে ছাত্রলীগ করতেন, এমন প্রমাণ ছাত্রদলের কাছে রয়েছে। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের বর্তমান সভাপতিও ছাত্রলীগের সাবেক কমিটিতে যুক্ত ছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।

“শিবির এখন আর কেবলমাত্র জামায়াত ঘনিষ্ঠ সংগঠন নয়—তারা ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে”, বলেন রাকিব। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ভবিষ্যতে যদি এমন সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সামনে আসে, তবে ছাত্রদল তা কখনও মেনে নেবে না।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন, তাহলে আজ ২০২৫ সালে তার কীভাবে ছাত্রত্ব থাকে?”

নিজ দলের দিকেও কঠোর বার্তা দেন রাকিব। জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির নিষ্ক্রিয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “যারা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, তাদের তালিকা ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে তৈরি করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি বলেন, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করে আহ্বায়ক কমিটি বিভাগভিত্তিক কমিটি ঘোষণা করবে, যেখানে কেবল ‘রানিং’ শিক্ষার্থীরাই জায়গা পাবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত, জবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, কাজী জাফর, সুমন সরদার, মাহমুদ হাসান, পরাগ হোসেনসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *