খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলে মূল ভূমিকা ছিল নুরুল হুদার

নির্বাচন ব্যবস্থার ধ্বংসযজ্ঞের পেছনে যাদের দায়ভার সবচেয়ে বেশি, তাদের মধ্যে অন্যতম সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা (KM Nurul Huda)। ‘নিশিরাতের ভোটের হোতা’ বলে পরিচিত এই বিতর্কিত সিইসি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন, যা আজও রাজনৈতিক অঙ্গনে এক গভীর ক্ষত হিসেবে গণ্য হয়।

২০১৮ সালের নির্বাচনে কারাবন্দি অবস্থায় বগুড়া-৬, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানিতে কমিশনার মাহবুব তালুকদার (Mahbub Talukder) তার পক্ষে মত দিলেও, কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন ভিন্নমত পোষণ করেন।

শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নেন সিইসি নুরুল হুদা। প্রায় ২০ মিনিট ধরে তিনি খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এবং সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখেন।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে যায়। অনেক বিশ্লেষকের মতে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল, যা তখনকার নির্বাচনকে আরও বিতর্কিত করে তোলে।

নুরুল হুদার নেতৃত্বে পরিচালিত নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার একাধিকবার বলেছেন, “এই নির্বাচন কমিশন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে।” স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে তিনি আখ্যা দেন ‘রক্তাক্ত নির্বাচন’ হিসেবে।

রাজনৈতিক মহলে এখনও এই সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন রয়ে গেছে—খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল কি আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল, না কি রাজনৈতিক চাপে নেওয়া একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *