উপদেষ্টার ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন, প্রশ্নবানে ভাসছেন আসিফ মাহমুদ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Hazrat Shahjalal International Airport) রবিবার সকালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan) ব্যাগে গুলিভর্তি একটি ম্যাগাজিন পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঢেউ। এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ।

রাতেই এক ফেসবুক পোস্টে আসিফ মাহমুদ নিজেই ঘটনার দায় স্বীকার করে জানান, এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। তিনি ব্যাখ্যা করেন, তার কাছে বৈধ লাইসেন্সধারী আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, যা তিনি মূলত পারিবারিক নিরাপত্তার কারণে বহন করেন।

তবে এই ব্যাখ্যায় অনেকেই সন্তুষ্ট নন। বরং প্রশ্নের মুখে পড়েছেন আসিফ মাহমুদ। জনপ্রিয় উপস্থাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষার (Abdun Noor Tushar) রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি তীব্র প্রতিক্রিয়ামূলক পোস্ট দিয়ে প্রশ্ন তোলেন—এই আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা, লাইসেন্সের বৈধতা এবং অস্ত্র বহনের পেছনের নৈতিকতা নিয়ে।

তুষার তার পোস্টে বলেন, “এলজিআরডি, লগে গান রাইখা দেন! নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী থাকার পরেও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার যুক্তিটা বেশ একটা শামীম ওসমানি বিষয়।”
তিনি ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন তোলেন, “এই অস্ত্রটি কোথা থেকে কেনা হয়েছে? এর মূল্য কত? বয়স ত্রিশের বেশি ও তিন বছর একটানা তিন লক্ষ টাকার বেশি আয়কর না দিলে তো এই লাইসেন্স পাওয়ার কথা না। তাহলে কীভাবে পেলেন?”

উপস্থাপক তুষার আরও বলেন, “দেশের সর্বত্র যাতায়াতের সময় কি তিনি এই ব্যাগটি সঙ্গে রাখেন? সবসময় কি ব্যাগে তাজা গুলি থাকে? বন্দুক-পিস্তল চালনার প্রশিক্ষণ কি তিনি নিয়েছেন? তার ব্যাগ কে গোছায়? ব্যাগে গুলি রেখে দিলো কে?” তিনি যোগ করেন, “এটা যদি অনিচ্ছাকৃতও হয়ে থাকে, তাও এটি একটি গুরুতর আইনি ব্যত্যয়। কারণ গুলি বহনের বিধান স্পষ্ট এবং সংবেদনশীল। অন্য কারও হাতে গুলি পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।”

সবচেয়ে গুরুতরভাবে তুষার দাবি তোলেন, “গত ১০ মাসে সরকার কারা কারা অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছে, সেই তালিকা প্রকাশ করা হোক। আমরা জানতে চাই, কারা নতুন করে সশস্ত্র হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অস্ত্র লাইসেন্সের বর্তমান মাপকাঠিটাই বা কী?”

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক অঙ্গনের একটি স্পর্শকাতর প্রশ্ন সামনে এসেছে—ক্ষমতার ঘনিষ্ঠদের লাইসেন্স প্রাপ্তি কি নিয়মের বাইরে কোনো প্রভাবশালী পথ ধরে এগোচ্ছে? এই বিতর্ক এখন কেবল আসিফ মাহমুদের ঘিরে নয়, বরং গোটা লাইসেন্সিং ব্যবস্থাকে ঘিরেই সংশয়ের আবহ তৈরি করেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *