ফাহাম আবদুস সালামের প্রশ্ন: এনসিসি কি বাস্তবতা না রাজনৈতিক কল্পকাহিনি?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাম আবদুস সালাম (Faham Abdus Salam) এক গভীর পর্যবেক্ষণমূলক ফেসবুক পোস্টে এনসিসি বা ‘ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিটি’ ধারণার যৌক্তিকতা এবং বিরোধী দল জামায়াতসহ বৃহত্তর রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে জোরালো প্রশ্ন তুলেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও ভোট পদ্ধতি ও শাসনব্যবস্থার মৌলিক কাঠামোতে কোনো জাতীয় ঐকমত্য না থাকা এবং প্রস্তাবিত জাতীয় ঐকমত্য কমিটির ব্যর্থ সম্ভাবনা নিয়ে তার বক্তব্যে উঠে এসেছে ক্ষোভ, হতাশা এবং রাজনৈতিক বাস্তবতার চরম প্রতিচ্ছবি।

নিচে ফাহাম আবদুস সালামের মূল পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

একটা জিনিস আপনারা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন।
বাংলাদেশের মানুষের যে প্রচলিত ধারণা – সে অনুযায়ী এ মুহূর্তে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হোলো জামায়েত এ ইসলামী এবং নির্বাচন হলে দলটি প্রধান বিরোধী দল হবে।
একটা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল সরকারের ফান্ডামেন্টাল সংগঠনে একমত না। সে লোয়ার হাউজে পিআর সিস্টেম চাইছে (যদিও দলের কেউ বোঝে কি না আমার সন্দেহ আছে যে এই সিস্টেম থাকলে আসলে কী হবে )। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আমরা এই জায়গায় পৌঁছেছি যে ভোটের ধরণ ও সরকারের গঠন কী করে হবে – এই ব্যাপারেও আমাদের মধ্যে কোনো কনসেন্সাস নাই।
কিন্তু এনসিসিতে যেই ৯ জন বসবে তারা কোনো এক জাদুবলে দেশের স্বার্থে ঐকমত্যে চলে আসবে। যেই ৪ জন চাইবে যে সরকার ফেইল করুক – তারা কোনো এক কারণে যখন এনসিসির টেবিলে বসবে – চাইবে যে সরকার ভালো লোক দিয়ে চলুক। এই হয় আমাদের সংবিধান সংস্কার কমিটির বুঝ।
ওকামস রেজারের মতো আমার একটা ছোটো পরীক্ষা আছে। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তারই আছে যে ঐ সিদ্ধান্তের যে ফলাফল – ভালো কিংবা খারাপ দুটাই ভোগ করবে। শুধু পুরস্কার ভোগ করবেন কিন্ত গোমাসা ভোগ করবেন না – এইটা হবে না।
ফাহাম’স রেজারের নিরীখে আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দেন। ধরেন এনসিসি একটা জঘন্য অনুমোদন দিলো। ধরেন যে প্রধান বিচারপতি ঘুষখোর ও চোর – এবং কেলেঙ্কারি অবস্থা। আপনি ক্ষুব্ধ। এই যে আপনার ক্ষুব্ধতা এর দায়ভার তো আপনি সরকার দলকে নেক্সট নির্বাচনে দিতে পারবেন। কিন্তু বিরোধী দলীয় নেতারা যারা ঐ টেবিলে বসেছিলো তাদেরকে কীভাবে দেবেন? অনেস্টলি জিজ্ঞেশ করেন নিজেকে। আপনি তো সরকারের ব্যর্থতার দরুন বিরোধী দলকে ভোট দিয়ে পুরস্কৃত করবেন। যে সিদ্ধান্ত সবাই মিলে নিলো কিন্তু গোমাসা হবে একজনের এবং পুরস্কৃত হবে আরেকজন – এই সিস্টেম ফান্ডামেন্টালি ভুল।
বাস্তবতা হোলো এনসিসির প্রস্তাবকৃত সদস্যদের ”ইন্ট্রেস্ট” আলাদা এবং রিয়াল ওয়ার্ল্ড সেল্ফ ইন্ট্রেস্ট দিয়ে চলে – আদর্শ দিয়ে চলে না। আপনি কি কোনোদিনও সেই লোকের পরামর্শ নেবেন যে চায় আপনি ফেইল করেন?
চিন্তা করেন বিষয়টা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *