আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশে আসছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (EU) একটি প্রাক-নির্বাচনি অনুসন্ধানী দল। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্ভাব্য সফরকাল সেপ্টেম্বর মাস হলেও এখনও দিন-তারিখ নির্ধারিত হয়নি। এই দলটির মূল উদ্দেশ্য—বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, সেটি সরেজমিনে যাচাই করা।
সরকার ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সফরের অনুমোদন দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা প্রদানে সম্মতিও জানিয়েছে। সরকারি একাধিক সূত্র জানায়, মে মাসে ইইউ বাংলাদেশ সরকারের কাছে সফরের জন্য অনুমতি চায় এবং সরকার তা জুন মাসেই অনুমোদন করে।
উল্লেখযোগ্য যে, এ ধরনের অনুসন্ধানী সফর নতুন নয়। ২০২৩ সালের জুলাই মাসেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছিল। সে সময় রিকার্ডো চেলেরি (Ricardo Chelleri) নেতৃত্বাধীন দলটি নির্বাচন সংক্রান্ত লজিস্টিক, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বাজেট বিশ্লেষণ করেছিল। তাঁরা তখন বিএনপি (BNP), অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সরকারি কর্মকর্তা, সংখ্যালঘু প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও করে।
নতুন করে আসা এই অনুসন্ধানী দলের সফরকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নির্বাচনি পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় আসবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে, ইইউ চূড়ান্তভাবে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কি না, সে সিদ্ধান্ত একান্তভাবেই এই সফরের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করছে।
সূত্রমতে, এই সফরে দলটি বিশেষভাবে খতিয়ে দেখবে—বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলগুলোর মধ্যে সংলাপের অবস্থা, সহিংসতার ঝুঁকি, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি, এবং ভোটার ও প্রার্থীদের নিরাপত্তাব্যবস্থা।
এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা দেখছেন বাংলাদেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার একটি আন্তর্জাতিক চাপ হিসেবে। যদিও সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে অনুমোদন এবং সহযোগিতার সম্মতি থেকেই পরিষ্কার যে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে প্রস্তুত সরকার।