গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ (Abdul Hannan Masud)। বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি সরাসরি সরকারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন এবং প্রশ্ন তোলেন তাদের নির্বাচন পরিচালনার সামর্থ্য নিয়ে।
ফেসবুক পোস্টে হান্নান মাসউদ লিখেছেন, ‘এর জন্যে তোদের চরম মূল্য দিতে হবে, এই গভর্নমেন্টকেও। একটা জেলায় জাতীয় নেতাদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, তারা করবে নির্বাচন!’
পোস্টটি মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এর আগে আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘আগে দেশ নিয়ন্ত্রণ করেন।’
এদিকে, গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণহীন রূপ নেয়। বিকেল পৌনে ৩টার দিকে সভা শেষে ফেরার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens’ Party – NCP) নেতাদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাটি চালিয়েছে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ (Awami League) ও ছাত্রলীগের (Chhatra League) নেতাকর্মীরা।
ঘটনার সময় গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গুলি চালায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, নিরাপত্তাবাহিনীর গাড়িও হামলার শিকার হয়। সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয় বলে জানা গেছে, যদিও সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনো নিশ্চিত হয়নি।
সহিংসতার জেরে প্রশাসন গোপালগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে, যা যেকোনো ধরণের সভা-সমাবেশ, মিছিল বা জমায়েত নিষিদ্ধ করে। বর্তমানে এনসিপির সিনিয়র নেতারা গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউজে অবস্থান করছেন এবং ঘটনার বিচার দাবি করছেন।
হান্নান মাসউদের বক্তব্য এবং গোপালগঞ্জের ঘটনাপ্রবাহ আবারো দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে উত্তেজনার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার সমর্থক গোষ্ঠী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাতের এই ধারাবাহিকতা আগামী দিনে আরও উদ্বেগজনক দিকে মোড় নিতে পারে বলেই আশঙ্কা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।