লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি–এলডিপির (Liberal Democratic Party) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এক বিস্ফোরক বক্তৃতায় সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন, রাজনীতি ও ড. ইউনূস প্রসঙ্গে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
অলি আহমদ বলেন, “ইউনূস সাহেবের কী অবস্থা হয়—এটা আল্লাহই জানেন। এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। এটা তো কেবল ট্রেইলার, এখন শুধু বিজ্ঞাপন চলছে—টুথপেস্টের, স্নো-পাউডারের। আসল খেলা এখনো শুরু হয়নি।”
তিনি বলেন, ছাত্ররা যে আন্দোলন করেছে, তারা চাইলে ‘রেভ্যুলুশনের গার্ড’ বা ওয়াচডগ হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু তারা রাজনৈতিক দলে রূপান্তর হয়েছে, যা তাকে হতাশ করেছে। অলি দাবি করেন, “কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের লোক ও কিছু নাস্তিক ছাত্রদের বিপথগামী করেছে।”
ছাত্রদের রাজনৈতিক উদ্যোগ নিয়ে তিনি আরও বলেন, “তারা এনসিপি (নতুন ছাত্র রাজনীতি) বানিয়েছে, কিন্তু মাথার ওপর ছাদ নেই। ইউনূস সাহেব তাদের রক্ষা করতে পারবেন না। এটা যেন গ্রামের ছেলেপেলের বেলুন ফোলানোর মতো, রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় আর দুষ্টু ছেলেরা এসে ফাটিয়ে দেয়।”
সাংবাদিকদের সামনে তিনি দাবি করেন, আন্দোলনের সময় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত একটা পর্যন্ত ২–৩ জন সহকর্মী নিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে কী ঘটছে, তা মনিটর করতেন তিনি নিজেই। সেই সময়ই তিনি আঁচ করেছিলেন যে এসব ছাত্ররা রাজনৈতিক দল করবে।
আন্দোলনের বাস্তবতা ও এর রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে অলি বলেন, “তিন মাস আগেই বলেছি—এখনো অনেক রক্তপাত বাকি আছে। কারণ আন্দোলন এখনো পূর্ণ রূপ পায়নি। অনেক বুদ্ধিজীবী পাগল আছেন—যারা টুপি পরেন কিন্তু আল্লাহ-রাসূল মানেন না। বিপ্লব, আন্দোলন ও যুদ্ধ—এই তিনটা জিনিস আলাদা। এই গাধাগুলো যদি এটাও না বোঝে, তাহলে কী লেখাপড়া করেছে?”
তিনি বলেন, “যুদ্ধ হলো অস্ত্রধারী দুই পক্ষের সংঘর্ষ। সেটা হয় স্বাধীনতার জন্য বা অন্য দেশ দখলের জন্য। এই আন্দোলনে তো এমন কিছু ছিল না। এটা ছিল হাসিনামুক্ত, আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টা। মুক্তিযুদ্ধ, একদফা আন্দোলন ও বিপ্লব এক জিনিস নয়।”
সবশেষে এলডিপি চেয়ারম্যান অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “এই সব পাগল লোকদের বলি—গাঁজা খাও, কিন্তু মানুষকে গাঁজা খাওয়ানোর চেষ্টা করো না।”
এই বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে বক্তব্যটিকে অত্যন্ত স্পষ্ট ও বিতর্কিত হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।