গোপালগঞ্জ জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে উদ্ভূত সহিংসতায় মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখসহ মোট ৩ হাজার ৮ গোপালীকে আসামি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে ৩০৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।
সর্বশেষ মামলা দায়ের করা হয়েছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড়া এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং রাস্তায় গাছ ফেলে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে। এই মামলাটি দায়ের করেন সদর থানার উপপরিদর্শক শামীম আল মামুন, শুক্রবার রাতে। এটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী রুজু করা হয়। মামলায় ৫৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চার মামলায় মোট ৩৫৮ জনের নাম সরাসরি উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে রাখা হয়েছে। ১৬ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩০৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।
জেলার পাঁচটি থানার তথ্য অনুযায়ী, সদর থানায় সর্বোচ্চ ৯২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—এর মধ্যে সদ্য দায়ের হওয়া মামলার ৪৪ জন রয়েছে। কাশিয়ানীতে গ্রেপ্তার ৭৭ জন, মুকসুদপুরে ৮৮ জন, টুঙ্গিপাড়ায় ২৭ জন এবং কোটালীপাড়ায় ২২ জনকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই দিন সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কর্মসূচি চালাতে গেলে এনসিপি কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠে। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও এনসিপির নেতাকর্মীরা। পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হন এবং আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ।
সাম্প্রতিক এই সহিংসতা এবং ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান গোটা গোপালগঞ্জে চরম উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং সাধারণ মানুষের ভেতরে উদ্বেগ বাড়ছে।