উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ’ সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (Hefazat-e-Islam Bangladesh)। সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, এই অনুপ্রবেশ সরকারের ব্যর্থতারই পরিচয় বহন করে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান বলেন, “ছাত্রলীগ নামধারী নিষিদ্ধ সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনকে স্যাবোটাজ করা হচ্ছে। সরকার তাদের রুখতে ব্যর্থ।”
বিবৃতিতে তারা মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৬ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, “শুধু দাবি মেনে নেওয়া নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে বাস্তবায়ন করেও দেখাতে হবে যে, তারা শিক্ষার্থীদের পাশে আছে।” তবে আন্দোলনের ভেতর থেকে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা তাদের উৎকণ্ঠিত করেছে বলেও জানান নেতারা।
তারা অভিযোগ করেন, “গোপনে অনেকেই নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি ও লুটের ভাগের আশায় নিষিদ্ধ লীগের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা মনে রাখুক, জনগণ এসব ষড়যন্ত্রকারীদের অচিরেই প্রত্যাখ্যান করবে।”
সরকারের ব্যর্থতার দায় কার?
হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতা অভিযোগ করেন, এক বছর পার হয়ে গেলেও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ (Awami League)-এর সন্ত্রাসীদের অনেকেই এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তাদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। “এই দুর্বলতা ও সদিচ্ছার অভাবের কারণেই ছদ্মবেশে স্যাবোট্যাজের সুযোগ পাচ্ছে সন্ত্রাসীরা,” বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
তারা সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “ইউনূস সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মৌলিক সংস্কারে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল, তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।”
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির দায় এড়াতে পারবে না কেউ
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিকে কেন্দ্র করে হেফাজত সরকারের বিরুদ্ধে আরও তীব্র ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, “শুধু শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগই যথেষ্ট নয়। যেসব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এই দুর্ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।”
তাদের দাবি, উত্তরার মতো জনবহুল এলাকায় কিভাবে একটি ত্রুটিপূর্ণ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উড়ানো হলো, তার ব্যাখ্যা অবশ্যই দিতে হবে। “বিমানবাহিনীর প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে হবে,” বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সংগঠনটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, “আমরা দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে রাখতে পারি না। রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে সাধারণ মানুষই বিপদের মুখে পড়ে।”