এ এম এম নাসির উদ্দিন (A M M Nasir Uddin), প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন না হলে নির্বাচন আগের ব্যবস্থায়ই অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার সকালে খুলনায় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। তখন নির্বাচনের সময়সূচি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সহ যাবতীয় তথ্য জানা যাবে।”
আস্থার সংকটকেই বড় চ্যালেঞ্জ বললেন সিইসি
খুলনার নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় সিইসি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমাদের সামনে বহু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষের আস্থা ফিরে পাওয়া। নির্বাচন কমিশন ও পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেই আমাদের প্রধান প্রয়াস।”
তিনি আরও বলেন, “ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করাও আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভোট দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে অনেকে। আমরা সেই আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে চাই।”
প্রযুক্তির অপব্যবহার ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো নিয়েও উদ্বেগ
সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়ানোকে আধুনিক যুগের এক বড় বিপদ বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে যাচাই না করেই ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এটি বর্তমানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে হুবহু কাউকে নকল করে বক্তব্য তৈরি করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কাজ চলছে।”
তিনি প্রযুক্তিকে ‘আধুনিক যুগের অস্ত্রের চেয়েও ভয়ংকর’ বলে আখ্যা দেন এবং জানান, একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পথে এই অপপ্রচারগুলো বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মিডিয়া ও প্রশাসনের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান
মিডিয়াকর্মীদের প্রতি সহযোগিতা কামনা করে সিইসি বলেন, “আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদি তা না হয়, তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনআস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ভোটারদের ফের ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ফয়সল কাদের (Foysal Kader), খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং ফারাজি বেনজির আহম্মেদ (Farazi Benzir Ahmed), খুলনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, যাঁরা নির্বাচনের প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলাদা করে মতামত দেন।