ঢাকা মহানগর পুলিশ (DMP) জানিয়েছে, রাজধানীর বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের মোট ২৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপি মিডিয়া বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার তালেবুর রহমান (Talebur Rahman) রোববার (৩ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরার কেবি কনভেনশন হলে সারাদেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগপন্থী নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। সেখানে কোনো রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র হয়েছে কি না, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়া ২৬ জনের মধ্যে কেউ কেউ প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিল, কেউ আবার প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। আমরা তদন্ত করে দেখছি, এর পেছনে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না।”
তিনি আরও জানান, বসুন্ধরার কেবি হলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের আরও ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে নানা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা জোরদার করেছে DMP। গোয়েন্দা নজরদারিতে সংযুক্ত করা হয়েছে সিটিটিসি ও সাদা পোশাকধারী সদস্যদের। ডিসি তালেবুর রহমান জানান, “রাজধানীতে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা রুখতে আমরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত আছি।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভেতরে সংঘবদ্ধভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালানোর অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। বসুন্ধরার এই ঘটনা সেই সন্দেহকে আরও জোরালো করেছে।
প্রশিক্ষণের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল, কে বা কারা এর আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়েছিল—এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর পুরোপুরি কেন্দ্রীয়ভাবে বসুন্ধরার ওই আয়োজনের দিকে। তদন্তে যদি রাজনৈতিক মুখোশের আড়ালে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো চক্রের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে মামলাটি আরও বিস্তৃত পরিসরে নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।